logo
ads

কুমিল্লার চান্দিনা থানায় চোরাচালানে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে সুজনসাহা নামক ১ ব্যক্তি নিহত। মামলা দায়ের, ৫ জন পলাতক, আটক ৬

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশকাল: ২৪ জুলাই ২০২২, ১২:০০ এ.এম
কুমিল্লার চান্দিনা থানায় চোরাচালানে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে সুজনসাহা নামক ১ ব্যক্তি নিহত। মামলা দায়ের, ৫ জন পলাতক, আটক ৬

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি: কুমিল্লা জেলার চান্দিনা থানার লারিচর গ্রামের সন্নিকটে মাদক চোরাচালান সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সুজন সাহা নামক একজন যুবক হত্যাকান্ডের জেরে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ গঠনার বিবরণে জানা যায়, ভারত সীমান্ত দিয়ে মাদক দ্রব্য সংগ্রহ করে বিভিন্ন কৌশলে বিক্রি করে রাকিব মাহমুদ ও তার সহযোগীরা। ইতিমধ্যে চোরাচালানের নতুন রুট আর সিন্ডিকেট গড়ে তুলে যুবলীগ সভপতি জাকির সরকার ও তার সহযোগী মেহেদী হাসান গ্রুপ। সম্প্রতি তারা চোরাচালান রুট দখলের জোর প্রচেষ্ঠা শুরু করে।


এই বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও দ্বন্দ চরমে পৌছায়। কয়েকবার সংঘর্ষ হয় ইত্যবসরে। ২১ শে জুলাই ২০২২ ইং তারিখ রাতে স্থানীয় যুবলীগের সাধারন সম্পাদক রাকিব মাহমুদ ও তার সহযোগীরা মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করতে চান্দিনা পৌরসভার লারিচর এলাকায় যায়। এর পূর্বেই পৌর যুবলীগ সভাপতি জাকির সরকার তার গ্রুপ নিয়ে লারিচর এলাকায় গিয়ে নতুন সিন্ডিকেটের নিকট হতে মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে। এতে রাকিব মাহমুদ ও তার সহযোগীরা উত্তেজিত হয়ে জাকির সরকার গ্রুপের উপর আক্রমন করে।

ঘটনাস্থলে তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। উভয় পক্ষে কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ হয়। এক পর্যায়ে জাকির সরকার কাটা রাইফেল দিয়ে এবং তার অন্যতম সহযোগী মেহেদী হাসান পাইপ গান দিয়ে অগ্রসরমান রাকিব মাহমুদ সদস্য ও স্থানীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন সাহাকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করলে গুলি সুজন সাহার মাথায় লাগলে ঘটনাস্থলে সে লুটিয়ে পড়ে। পরে সুজন সাহাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে ডাক্তারগন তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

 

চান্দিনা এলাকায় দ্বন্দের বিষয় ও হত্যা কান্ডের বিষয় রাজনৈতিক অভ্যন্তরিন দ্বন্দ্ব বলে লোকজন ধারণা করে। কিন্তু আমাদের এই প্রতিবেদক গভীরভাবে অনুসন্ধান ও তদন্ত করে জানতে পারেন উভয় পক্ষের মধ্যে বেশীর ভাগ ব্যক্তি ক্ষমতাসীন দলের সাথে সংশ্লিষ্ট হলেও প্রকৃত ঘটনার অন্তরালে মাদকদ্রব্য জেরাচালান সংকান্ত প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই ঘটনায় সুজন সাহার ভাই উত্তম সাহা বাদী হয়ে জাকির সরকার সহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে ২৩শে জুলাই ২০২২ তারিখে হত্যা মামলা রুজু করেন।

মামলার আসামীরা হলেন, মহারং গ্রামের ওমর ফারুক এর ছেলে মেহেদী হাসান, হারং গ্রামের মৃত মফিজ সরকারের ছেলে জাকির সরকার, বেলাশ্বর গ্রামের আব্দুল গফফারের ছেলে মাহিন মিয়া। ছাইকট গ্রামের মনির আলীর ছেলে আলী আম্বিয়া, লারিচর গ্রামের বিনয় কুমার ঘোষের ছেলে রাজন কুমার ঘোষ, একই গ্রামের ডাক্তার আব্দুল মান্নানের ছেলে সায়মন আব্দুল্লাহ, বেলাশ্বর গ্রামের মৃত আপ্তাব আলীর ছেলে মারজান আলী, চান্দিনা বাজারের বাজারের মাতাব মিয়ার ছেলে মিন্টু মিয়া, মহারং গ্রামের আশরাফ মিয়ার ছেলে আছকির মিয়া, ছাইকট গ্রামের তনছির আলীর ছেলে কওছর আলী, এবং বেলাশ্বর গ্রামের সাইফুল ইসলাম কাজলের ছেলে মোঃ ফখরুল ইসলাম।


এই বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চান্দিনা থানা মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন, হত্যা কান্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে জোর তদন্ত চলছে। আসামীর মধ্যে এজাহার নামীয় ১নং আসামী মেহেদী হাসান ও ২নং আসামী জাকির সরকার সহ ৫জন আসামী পলাতক রয়েছে এবং ৬জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জনান।


এলাকাবাসী আসামীপক্ষ ও বাদীপক্ষ উভয় গ্রুপকে চোরাকারবারী বলে জানালেও অধিকাংশ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান, ওমর ফারুকের ছেলে মহারং গ্রামের মেহেদী হাসান একজন ব্যবসায়ী ও অন্যদলের সদস্য। তাকে মামলার ১নং আসামী করায় তারা বিস্ময় প্রকাশ করেন। এই বিষয় চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও তদন্তকারী কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারা জানান, জাকির সরকারের সাথে মেহেদী হাসানের ব্যক্তিগত ঘনিষ্ট সম্পর্ক বিদ্যমান। মেহেদী হাসান এর নামে চান্দিনা থানায় আরেকটি মাদকদ্রব্য আইনে মামলা আছে। সে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। এলাকাবাসীর বক্তব্য ও প্রশাসনের বক্তব্যের সাথে আসামী মেহেদী হাসানের প্রশ্নে বিস্তর ব্যবধান রয়েছে বলে এই প্রতিবেদক জানান।


আলামত হিসাবে ঘটনাস্থল হতে ১ কার্টুন ভারতীয় মদ, প্রায় ১০ কেজি গাজা, ৫০০ ইয়াবা ট্যাবলেট ও ১০টি ফেনসিডিলের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। পলাতক আসামীদের গ্রেফজরে ডিবি, র‍্যাব ও চান্দিনা থানা পুলিশ ঝটিকা অভিযান পরিচালনা করছেন বলে জানা যায়। বিভিন্ন মাধ্যম হাতে কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি প্রধান দুই আসামী ও নিহত সুজন সাহার ছবি সংগ্রহ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ