লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির যৌথ উদ্যোগে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর, ২০২৫) সন্ধ্যা শেষে জেলাপরিষদ মিলনযতন (পুরাতন) প্রাঙ্গণে ১৩৫তম লালন তিরোধান দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে লালনের জীবন ও দর্শনকে কেন্দ্র করে গভীর আলোচনা চলল, যা হৃদয়ে ধরে রাখল তার আধ্যাত্মিকতার সুস্পষ্ট ছবি।
আলোচনা সভায় বক্তারা লালনের জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন। তারা তুলে ধরলেন, কীভাবে ধর্মীয় কুসংস্কার ও গোড়ামির দ্বারা লালন নির্যাতিত হয়েছিলেন, এবং সিরাজ সাইয়ের প্রভাব তাঁর গানে কতটা প্রকট। আরও উল্লেখযোগ্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কীভাবে লালনের গানে মুগ্ধ হয়ে তাঁর বেশ কিছু রচনা প্রকাশ করেছিলেন—এই সংযোগ আলোচনায় এক নতুন আলোকচিত্র ফুটে উঠল। বক্তারা লালনের আধ্যাত্মিকতার পাশাপাশি তাঁর মানবিক দর্শন ও সমাজচেতনার গভীরতাও তুলে ধরলেন, যা তাঁকে সময়ের ওপরে তুলে ধরে।
সভা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে লালমনিরহাট জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিক্ষার্থীদের গঠিত “মায়ের তরী” সংগঠন লালনের অমর গান পরিবেশন করল। তাদের কণ্ঠে “মনের মাঝে আছে পঞ্চম আলি” বা “খাঁচার ভিতরে কোথায় ভাই পাখি” এমন সুরে প্রাঙ্গণ ভরে গেল আত্মার ঐকতানে। গানের প্রতিটি স্তবকে মিশে গেল লালনের সাধনা ও মানবিকতা, যা শ্রোতাদের মনে এক অপরূপ শান্তি নিয়ে এল। এই অনুষ্ঠান যেন লালনের স্মৃতিকে পুনরুজ্জীবিত করল, তাঁর গানকে আজকের প্রজন্মের কাছে বহন করে এল।

