logo
ads

“ইউক্রেনে টমাহক পাঠানোর ইঙ্গিত ট্রাম্পের, রাশিয়ার পাল্টা হুঁশিয়ারি”

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশকাল: ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:১৮ পি.এম
“ইউক্রেনে টমাহক পাঠানোর ইঙ্গিত ট্রাম্পের, রাশিয়ার পাল্টা হুঁশিয়ারি”

সংগৃহীত ছবি

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি ইউক্রেনকে দীর্ঘ-পাল্লার টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে পারেন। এই সিদ্ধান্ত হলে যুদ্ধক্ষেত্রে নতুন করে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে রাশিয়া।

রোববার (১২ অক্টোবর) এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “দেখা যাক... আমি হয়তো পাঠাতে পারি।” তবে তিনি এটিও বলেন যে, টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানো হবে “একটি নতুন আগ্রাসী পদক্ষেপ।”

এই মন্তব্য আসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ফোনালাপের পর। আলোচনায় জেলেনস্কি কিয়েভের পাল্টা আক্রমণ সক্ষমতা বাড়াতে আরও উন্নত অস্ত্র সহায়তার অনুরোধ জানান।

ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বিষয়টিকে “চরম উদ্বেগের” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত নাটকীয়, কারণ সব পক্ষ থেকেই উত্তেজনা বেড়ে যাচ্ছে।”

পেসকভ আরও জানান, টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা প্রায় ২,৫০০ কিলোমিটার, যা মস্কো পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম। “যদি এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো রাশিয়ার দিকে নিক্ষেপ করা হয়, তাহলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে জানব না সেগুলো পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করছে কি না। তখন রাশিয়ার কী প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিত?” — বলেন তিনি।

রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ সামাজিক মাধ্যমে আরও সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেন, “টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানো সবার জন্যই ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে — প্রথমত ট্রাম্পের জন্যই।”

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “আমি হয়তো রাশিয়ার সঙ্গে কথা বলব। যদি যুদ্ধ বন্ধ না হয়, তাহলে আমরা হয়তো টমাহক পাঠাতে পারি — আবার নাও পারি। রাশিয়া কি চায় টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র তাদের দিকে আসুক? আমি তা মনে করি না।”

২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসনের পর থেকে ইউক্রেন বহুবার যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর কাছে দীর্ঘ-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র চেয়েছে। এসব অস্ত্র রুশ ভূখণ্ডের ভেতর থেকে হামলা চালানো বা সামরিক সরবরাহ লাইন ব্যাহত করার সক্ষমতা দেবে।

সম্প্রতি কিয়েভে রাশিয়ার একের পর এক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়, বিশেষ করে জ্বালানি অবকাঠামোতে। শীত আসার আগে ইউক্রেন এখন তার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও পাল্টা হামলার সক্ষমতা জোরদারে মনোযোগী।

গত মাসে ট্রাম্পের বিশেষ দূত কিথ কেলগ ফক্স নিউজকে বলেন, “এই যুদ্ধে নিরাপদ কোনো অঞ্চল নেই।” তার বক্তব্যে ইঙ্গিত ছিল, ট্রাম্প প্রশাসন হয়তো ইউক্রেনকে গভীর রুশ ভূখণ্ডে হামলার অনুমতি দিয়েছে।

টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র কী?
টমাহক ল্যান্ড অ্যাটাক মিসাইল (TLAM) হচ্ছে মার্কিন নৌবাহিনীর তৈরি সাবসোনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, যা সমুদ্র ও স্থল থেকে উৎক্ষেপণ করা যায়। এর পাল্লা প্রায় ১,৫০০ মাইল (প্রায় ২,৫০০ কিমি) এবং এটি নির্ভুলভাবে স্থলভাগের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প যদি সত্যিই ইউক্রেনকে টমাহক সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে এটি যুদ্ধের “সবচেয়ে বড় উত্তেজনামূলক মোড়” হয়ে দাঁড়াবে এবং ওয়াশিংটন-মস্কো সম্পর্ককে নতুন সংকটে ঠেলে দিতে পারে।

সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি, এনবিসি নিউজ, ফক্স নিউজ, আল জাজিরা 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ