পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকায় সংঘটিত তীব্র উত্তেজনার পেছনে অবস্থান করছে তালেবান ও পাকিস্তানি তেহরিক-ই-তালেবান (TTP) নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদ। পাকিস্তানি কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, মেহসুদ আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর প্রায় দৈনিক হামলার নির্দেশ দেন।
গত বুধবার দুই দেশের মধ্যে সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে পাকিস্তানের মূল অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দু হলো আফগানিস্তানে মেহসুদের উপস্থিতি এবং তার শীর্ষস্থানীয় সহযোগীদের কার্যক্রম। গত সপ্তাহে কাবুলে এক বেসামরিক হাওয়া হামলায় তার বহন করা গাড়ি লক্ষ্য করা হয়। হামলায় মেহসুদের প্রাণহানি হয়নি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নূর ওয়ালি মেহসুদ ২০১৮ সালে TTP-এর নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর নেতৃত্বে দলটি কৌশলগতভাবে পরিবর্তিত হয়েছে এবং ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীকে একত্রিত করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, ধর্মীয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মেহসুদ শুধু অস্ত্রের মাধ্যমে নয়, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ভাবধারার মাধ্যমে পাকিস্তানে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন।
মেহসুদ পূর্বে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতেন, কিন্তু ২০১৪ সালের স্কুল আক্রমণে শিশুদের হত্যার পরে তিনি কেবল সামরিক ও পুলিশ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী অভিযোগ করে, TTP ইসলামকে বিকৃত করছে এবং ভারত এই গোষ্ঠীকে সমর্থন দিচ্ছে, যা নেপাল কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মেহসুদ পাকিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলের জনগণ বা দেশের অন্যান্য অংশে জনসমর্থন পায়নি। তিনি আফগানিস্তান-সদৃশ সরকারের স্বরূপ চায় এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ইসলামী আইন প্রবর্তনের দাবি করে। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ এ দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সাময়িক যুদ্ধবিরতি স্থাপনের পরও সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা অব্যাহত। সাম্প্রতিক সংঘর্ষ ও বিমান হামলা দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করেছে।
সূত্র: রয়টার্স, পাকিস্তানি নিরাপত্তা ও সামরিক কর্মকর্তাদের বর্ণনা।

