logo
ads

ট্রাম্পের স্বপ্নভঙ্গ—পৃথিবীজুড়ে চীনের নজরদারি ব্যবস্থা কার্যকর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশকাল: ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৫৩ পি.এম
ট্রাম্পের স্বপ্নভঙ্গ—পৃথিবীজুড়ে চীনের নজরদারি ব্যবস্থা কার্যকর

সংগৃহীত ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেখানে “গোল্ডেন ডোম” নামে বহুতল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেখানে চীন সেই ধারণাকে বাস্তবে রূপ দিতে শুরু করেছে। দক্ষিণ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বেইজিং এক “গ্রহব্যাপী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা”র কার্যকর প্রোটোটাইপ তৈরি করেছে, যা মহাকাশ, সমুদ্র, আকাশ ও স্থলভাগের নানা সেন্সরের সমন্বয়ে একযোগে হুমকি শনাক্ত করতে সক্ষম।

চীনের বিজ্ঞানীরা এটিকে নাম দিয়েছেন “ডিস্ট্রিবিউটেড আর্লি ওয়ার্নিং ডিটেকশন বিগ ডাটা প্ল্যাটফর্ম”, যা একসঙ্গে এক হাজার পর্যন্ত ক্ষেপণাস্ত্রের গতি ও প্রকার বিশ্লেষণ করতে পারে—যে ক্ষেপণাস্ত্র পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে চীনের দিকে নিক্ষেপিত হোক না কেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্বপ্ন’ থেকে চীনের ‘বাস্তবতা’

১৯৮৩ সালে ঠান্ডা যুদ্ধের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান প্রথম ঘোষণা দিয়েছিলেন এক মহাকাশভিত্তিক প্রতিরক্ষা প্রকল্পের—“স্ট্র্যাটেজিক ডিফেন্স ইনিশিয়েটিভ” বা জনপ্রিয়ভাবে “স্টার ওয়ার্স”। উদ্দেশ্য ছিল শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করা। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের সঙ্গে সঙ্গে সেই প্রকল্প আর বাস্তবায়িত হয়নি।

দীর্ঘ চার দশক পর, ২০২৫ সালের মে মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুনভাবে প্রস্তাব করেন ‘গোল্ডেন ডোম’ নামে একটি বহুতল ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। প্রস্তাবিত ১৭৫ বিলিয়ন ডলারের এ প্রকল্পে চার স্তরের প্রতিরক্ষা ঢাল থাকবে—একটি স্যাটেলাইটভিত্তিক এবং তিনটি স্থলভিত্তিক, যা যুক্তরাষ্ট্র, আলাস্কা ও হাওয়াই জুড়ে বিস্তৃত হবে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।

চীনের নতুন সক্ষমতা

দক্ষিণ চায়না মর্নিং পোস্টের তথ্যমতে, চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA) ইতোমধ্যে এই বৈশ্বিক প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের একটি প্রোটোটাইপ কার্যকরভাবে পরীক্ষা করেছে। নানজিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রনিকস টেকনোলজির গবেষকেরা বলেছেন, এই সিস্টেম একযোগে হাজারো ডেটা প্রসেসিং টাস্ক সম্পন্ন করতে সক্ষম এবং বাস্তব সময়ে “ওয়ারহেড” ও “ডিকয়” পার্থক্য নির্ধারণ করতে পারে।

চীনের সামরিক গবেষণা জার্নাল মডার্ন রাডার-এ প্রকাশিত এক প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে, এই প্রযুক্তি PLA সদর দপ্তরের তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা বহুগুণ বাড়াবে এবং “একীভূত প্রতিরক্ষা সমন্বয়” সম্ভব করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের চ্যালেঞ্জ

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের “গোল্ডেন ডোম” প্রকল্প এখনো পরিকল্পনা পর্যায়ে রয়েছে। প্রযুক্তিগত কাঠামো নির্ধারণ না হওয়ায় কাজ শুরু করতে পারেনি পেন্টাগন। বিশ্লেষকদের মতে, চীনের এই অগ্রগতি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক আধিপত্যের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ওয়াশিংটনের একাধিক থিঙ্কট্যাঙ্ক ইতিমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, চীনের এই প্রকল্প বৈশ্বিক সামরিক ভারসাম্যে নতুন প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করতে পারে। অন্যদিকে, বেইজিং বলছে—এই ব্যবস্থা কেবল প্রতিরক্ষামূলক এবং আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।

 সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট,রয়টার্স,মডার্ন রাডার জার্নাল,এনডিটিভি,দ্য গার্ডিয়ান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ