logo
ads

“নোবেলজয়ী বিরোধী নেত্রীকে ঘিরে কূটনৈতিক ঝড়: নরওয়েতে দূতাবাস বন্ধ করল ভেনেজুয়েলা”

আন্তর্জাতিক ডেস্ক , দৈনিক বর্তমানবাংলা

প্রকাশকাল: ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:০৬ পি.এম
“নোবেলজয়ী বিরোধী নেত্রীকে ঘিরে কূটনৈতিক ঝড়: নরওয়েতে দূতাবাস বন্ধ করল ভেনেজুয়েলা”

সংগৃহীত ছবি

নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে থাকা ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে ঘিরে নতুন কূটনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে। সোমবার (১৪ অক্টোবর) কারাকাস ঘোষণা করেছে—নরওয়ের রাজধানী অসলোতে তাদের দূতাবাস কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হবে।

ভেনেজুয়েলা সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই পদক্ষেপটি তাদের পররাষ্ট্র সেবার “পুনর্গঠন” পরিকল্পনার অংশ। তবে তারা সরাসরি মাচাদোর নোবেল পুরস্কার প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেনি। নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও কারাকাসের সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছে, যদিও কোনো আনুষ্ঠানিক কারণ জানানো হয়নি।

গত শুক্রবার নরওয়ের নোবেল কমিটি ৫৮ বছর বয়সি বিরোধী নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে ২০২৫ সালের শান্তি পুরস্কার প্রদান করে। কমিটি জানায়, “ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর দীর্ঘদিনের নিরলস প্রচেষ্টা” এই সম্মাননার মূল কারণ।

অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো পুরস্কার ঘোষণার পর মাচাদোকে “শয়তানঘেরা ডাইনি” আখ্যা দেন এবং পুরস্কারটিকে “পশ্চিমা ষড়যন্ত্রের অংশ” বলে অভিহিত করেন।

 নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “ভেনেজুয়েলার দূতাবাস বন্ধের সিদ্ধান্তটি দুঃখজনক। রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও আমরা আলোচনার দ্বার খোলা রাখতে চাই।” তারা আরও মনে করিয়ে দেয়, নোবেল শান্তি পুরস্কার সম্পূর্ণ স্বাধীন একটি সংস্থা, যার সঙ্গে নরওয়েজীয় সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই।

বিবিসি মুন্ডোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাচাদো বলেন, “এই পুরস্কার আমাদের আন্দোলনের জন্য এক ধরনের ইনজেকশন—এটি জনগণকে শক্তি, আশা ও নতুন উদ্যম দেয়।” ২০১৩ সালে সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় মাদুরো সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলার পর থেকেই তিনি ক্রমশ সরকারের টার্গেটে পরিণত হন। গত এক বছরের অধিকাংশ সময়ই তাঁকে আত্মগোপনে থাকতে হয়েছে।

দূতাবাস বন্ধের ঘোষণা এমন এক সময়ে এলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভেনেজুয়েলার সম্পর্ক ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ভেনেজুয়েলা থেকে আসা চারটি নৌকা ধ্বংস করেছে, যেগুলোকে তারা মাদকবাহী বলে দাবি করেছে। এ ঘটনায় অন্তত ২১ জন নিহত হন। মাদুরো প্রশাসন ঘটনাটিকে “আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন” বলে নিন্দা জানিয়েছে।

কারাকাস একই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়াতেও তাদের দূতাবাস বন্ধ করেছে, তবে নতুন করে আফ্রিকার জিম্বাবুয়ে ও বুরকিনা ফাসোতে দূতাবাস চালু করছে—যাদের তারা “পশ্চিমা আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কৌশলগত মিত্র” হিসেবে বর্ণনা করেছে।

এমন কূটনৈতিক টানাপোড়েনের নজির নতুন নয়। ২০১০ সালে চীনা ভিন্নমতাবলম্বী লিউ জিয়াওবো নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার পর চীন–নরওয়ে সম্পর্ক ছয় বছর ধরে স্থবির ছিল। বিশ্লেষকদের মতে, ভেনেজুয়েলার সিদ্ধান্তও সেই কূটনৈতিক ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে পারে।

সূত্র:পলিটিকো, বিবিসি মুন্ডো, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, এএফপি, নরওয়েজিয়ান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ