মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট দেখে অবাক হয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান কোচ ড্যারেন সামি। বাংলাদেশ সফরে এসে দলটি বৃহস্পতিবার ঐচ্ছিক অনুশীলনে অংশ নিলেও সামি দীর্ঘ সময় ধরে পিচ পর্যবেক্ষণ করেন। শুক্রবারের আনুষ্ঠানিক অনুশীলনের দিনও দেখা যায় একই দৃশ্য—মাঠে ব্যাট বা বল নয়, সামির কৌতূহল ছিল পুরোপুরি উইকেট নিয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে সামি সোজাসাপ্টা বললেন, “আমি উইকেট দেখেছি, কিন্তু নিশ্চিত নই—আমরা এমন কিছু নিজের দেশে তৈরি করতে পারব কি না। এমন উইকেট আমরা আগে কখনও দেখিনি।”
মিরপুরের এই উইকেটটি গত জুলাইয়ে পাকিস্তান সিরিজের পর আর ব্যবহার হয়নি। আড়াই মাসের বিশ্রাম ও শরতের বৃষ্টিতে মাঠের সবুজ আউটফিল্ড যেমন সতেজ, তেমনি উইকেটের চেহারাও বদলে গেছে।
অল্প সময়ের জন্য কাভার সরানোর পর দেখা যায়, প্রথম ম্যাচের পিচে গাঢ় কালো মাটির স্তর—যা সাধারণত দেখা যায় না। বাংলাদেশে আগে কালো মাটির উইকেট হলেও এবারকারটি অনেক গাঢ় ও শক্ত দেখাচ্ছে, যা স্পিনারদের জন্য সুবিধা হতে পারে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
সামি বলেন, “উপমহাদেশের কন্ডিশন ব্যাটসম্যানদের জন্য সবসময়ই কঠিন। তবে যারা সম্প্রতি ভারতে খেলছে, তাদের জন্য এটা বাড়তি সুবিধা—কারণ তারা এমন পিচের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া জানে।”
সংবাদ সম্মেলনে সামির পাশে বসা অধিনায়ক শাই হোপ তখনও উইকেট দেখেননি। তিনি বলেন, “যেমন উইকেটই হোক না কেন, আমাদের লক্ষ্য হবে দ্রুত মানিয়ে নেওয়া। এখানকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সক্ষমতাই হবে বড় পরীক্ষা।”
সামির মতে, সাফল্যের চাবিকাঠি হবে মাঠে গিয়ে পরিস্থিতি বোঝার ক্ষমতা ও অভিযোজন।
তিনি বলেন, “দিনের শেষে গুরুত্বপূর্ণ হলো অভিজ্ঞতা, জ্ঞান, আর নিজের প্রয়োগক্ষমতা। কিছু খেলোয়াড়ের জন্য এটা একেবারে নতুন অভিজ্ঞতা হতে পারে, কিন্তু শেখাটা ম্যাচের মাঝেই করতে হবে। পরিস্থিতি বুঝে তারপর সিদ্ধান্ত নিতে হবে—সফল হতে কী করতে হবে।”
শেষ প্রশ্নে সামির কাছে জানতে চাওয়া হয়, উইকেট আসলে কেমন দেখেছেন। সামির জবাব কূটনৈতিক—
“আমি কীভাবে ব্যাখ্যা করব জানি না। তবে একটা বিষয় নিশ্চিত—উইকেট আমাদের মানসিকতাকে প্রভাবিত করবে না। আমরা যেখানেই খেলি না কেন, কন্ডিশন বিশ্লেষণ করব, তারপর ঠিক করব কোন স্কিল ব্যবহার করতে হবে এবং সেই পরিকল্পনায় বিশ্বাস রাখব।”
বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচটি শনিবার (১৮ অক্টোবর) মিরপুরে অনুষ্ঠিত হবে। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ ঘরের মাঠে স্পষ্ট ফেভারিট হলেও, পিচের আচরণ এবার হতে পারে ম্যাচের সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর।

