সুইজারল্যান্ডের অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রের কারখানার উচ্চ ট্যারিফে ভুগছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক আরোপিত ৩৯% ট্যারিফের কারণে সুইস পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট কারিন কেলার-সাটার এবং সরকার কর্তৃক বহু চেষ্টার পরও মার্কিন ট্যারিফ হ্রাসে কোনও প্রগতি হয়নি।
সুইজারল্যান্ড ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশ নয়, তাই ব্রাসেলসের সঙ্গে করা চুক্তি থেকে সুবিধা পায় না। তবে দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে উদ্ভাবনী এবং প্রতিযোগিতামূলক অর্থনীতি হিসেবে পরিচিত। এটি মার্কিন বাজারে গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগকারী, যা প্রায় ৪ লাখ মার্কিন চাকরি তৈরি করে। সুইস ব্যবসায়ী জান অ্যাটেসল্যান্ডার, Economiesuisse-এর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পরিচালক, বলেন, "৩৯% ট্যারিফ একেবারেই অনুচিত এবং অযৌক্তিক।"
সুইজের রফতানির প্রায় ১৭% মার্কিন বাজারে যায়। ক্ষতির মধ্যে রয়েছে ওষুধ, যদিও সেগুলি বর্তমানে ট্যারিফের আওতায় নয়। তবে মেডিকেল টেকনোলজি শিল্প, বিশেষত মাইক্রো প্রেসিশন সিস্টেমস (MPS), এখন সঙ্কটের মুখে। কোম্পানির সিইও জিলস রবার্ট বলেন, “আমাদের পণ্যের যেকোনো অংশ পৃথকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর করা প্রায় অসম্ভব।”
স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। সুইস কোম্পানিগুলোর উচ্চমানের মেডিকেল যন্ত্রপাতি, যা শুধু সুইজারল্যান্ডে তৈরি, মার্কিন বাজারে সরবরাহ কমানো হতে পারে। অ্যাড্রিয়ান হান, Swiss MedTech-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বলেন, "মেডিকেল ডিভাইসগুলো মার্কিন রোগীর জন্য আরও ব্যয়বহুল হয়ে যাবে।"
সুইস সরকার এবং ব্যবসায়ীরা এখন বিকল্প বাজারে মনোযোগ দিচ্ছে। ১ অক্টোবর থেকে ভারতের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি কার্যকর হয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকার মারকোসুর ও চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্প্রসারিত হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সুইসের বাণিজ্য অটুট রয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, “রফতানির জন্য সহনশীলতা সুইস DNA-এর অংশ। আমরা সমস্যার সমাধান খুঁজে পাবো।” তবে দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন সঙ্গে সুইসের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সুইস ব্যবসায়ীরা যুক্তরাষ্ট্রকে সৃজনশীল ও উদ্যোগী সহযোগী হিসেবে দেখতেন, যা এখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
সূত্র: এএফপি, গেটি ইমেজেস, সুইস মেডটেক, ইকোনমিসুইস

