logo
ads

বৃষ্টির সুরে উচ্ছ্বাস: চিওড়ায় ফুটবলের জয়গান

চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশকাল: ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৫২ এ.এম
বৃষ্টির সুরে উচ্ছ্বাস: চিওড়ায় ফুটবলের জয়গান

বর্তমান বাংলা

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের চিওড়া ইউনিয়নের ঐতিহাসিক বেগম ফয়জুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ যেন ১০ অক্টোবর, শুক্রবার বিকেলে এক উৎসবের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। ডাবল এলইডি টিভি কাপ ফুটবল টুর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলার উত্তেজনায় মুখরিত এই মাঠে মুষলধারে বৃষ্টি যেন দর্শকদের উৎসাহকে একটুও টলাতে পারেনি। বৃষ্টির ফোঁটার মাঝে ছাতা আর উচ্ছ্বাস নিয়ে ভিড় করা শত শত দর্শকের হাততালিতে জেগে উঠেছিল চিওড়ার মাটি, যেখানে খেলা গড়িয়েছিল ট্রাইব্রেকারের শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্ত পর্যন্ত। সাস্থানগর/একতালিয়া ক্লাব চ্যাম্পিয়নের মুকুট ছিনিয়ে নিয়েছে, আর জিনিদকরা সূর্য তরুণ একতা সংঘ ক্লাব রানার্স আপ হয়ে গর্বের সাথে মাঠ ছাড়ে। এই খেলা ছিল না শুধু ফুটবলের লড়াই, বরং যুব সমাজের প্রাণশক্তি আর সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল উৎসব।

টুর্ণামেন্ট পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সোলেমান মজুমদারের সভাপতিত্বে এবং ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি সোহরাব হোসেন সোহাগের সঞ্চালনায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান যেন একটি মানবিক মিলনমেলায় রূপ নিয়েছিল। প্রধান অতিথি উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ কামরুল হুদা এবং প্রধান বক্তা চিওড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম শাহীন রেজার উপস্থিতি অনুষ্ঠানে যোগ করেছে এক গভীর তাৎপর্য। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ হারুন অর রশিদ মজুমদার, সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোঃ শাহ আলম রাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুন নবী পাটোয়ারী নুরু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন ডেভিড, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী রকিব, মোহাম্মদ ফারুক খাঁন, যুবদল নেতা নাজমুল হাসান মনির, মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন মাসুম, কাজী আবুল কাসেম, আনিসুর রহমান জাহাঙ্গীর, জহির আহমেদ মজুমদার, মোহাম্মদ মানিক মজুমদারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। তাদের উপস্থিতি যেন প্রমাণ করল, চিওড়ার এই উদ্যোগ কেবল একটি খেলা নয়, গ্রামের হৃদয়ের একতার প্রতীক।

বৃষ্টির মাঝেও দর্শকদের উচ্ছ্বাস ছিল অদম্য। মাঠের চারপাশে ছাতা আর রেইনকোটে সজ্জিত দর্শকরা যেন খেলার প্রতিটি মুহূর্তে নিজেদের হৃদয় ঢেলে দিয়েছিল। গোলের জন্য হাততালি, ট্রাইব্রেকারের উত্তেজনায় চিৎকার, আর চ্যাম্পিয়ন ঘোষণার মুহূর্তে উল্লাস—সব মিলে চিওড়ার মাঠ যেন এক জীবন্ত ক্যানভাসে পরিণত হয়েছিল। বক্তারা তাদের বক্তব্যে যেন এই উৎসাহের প্রতিধ্বনি তুললেন—“মোবাইল আসক্তি ছেড়ে যুবকরা খেলার মাঠে আসছে, এটা বর্তমান সময়ে ভালো লক্ষণ। আজকের মুষলধারা বৃষ্টির মাঝে উপস্থিত দর্শকদের ভিড় সেটাই প্রমাণ করে। যুবকদের খেলার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। এটা আমাদের সকলের দায়িত্ব।” এই কথাগুলো যেন শুধু একটি বক্তৃতা নয়, একটি সমাজের জাগরণের আহ্বান।

এই টুর্ণামেন্ট শুধু ফুটবলের লড়াই ছিল না, এটি ছিল যুব সমাজের প্রাণশক্তির এক উদযাপন, যেখানে বৃষ্টি আর উৎসাহ মিলে একটি অবিস্মরণীয় স্মৃতি তৈরি করেছে। চিওড়ার এই মাঠে, যেখানে বেগম ফয়জুন্নেছার স্মৃতি লুকিয়ে আছে, সেখানে যুবকদের পা ফেলা প্রতিটি গোল যেন একটি নতুন স্বপ্নের জন্ম দিয়েছে। এই উদ্যোগ প্রমাণ করেছে, সম্প্রীতি আর উৎসাহের মাধ্যমে একটি গ্রাম কীভাবে একটি সমাজের হৃদয় জয় করতে পারে। বৃষ্টির ফোঁটার মাঝে চিওড়ার এই দিন যেন চিরকাল থেকে যাবে—একটি গল্প হিসেবে, যেখানে ফুটবলের গোল শুধু জালে নয়, মানুষের হৃদয়েও আঘাত হানে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ