logo
ads

কুমিল্লা বোর্ডের কালো অধ্যায়: নয় কলেজে শূন্য পাসের অন্ধকার ছায়া

কুমিল্লা প্রতিনিধি

প্রকাশকাল: ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩৯ এ.এম
কুমিল্লা বোর্ডের কালো অধ্যায়: নয় কলেজে শূন্য পাসের অন্ধকার ছায়া

বর্তমান বাংলা

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের আকাশে ২০২৫-এর এইচএসসি ফলাফল যেন একটা ঘন কালো মেঘের মতো ঘনিয়ে এসেছে, যা নয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজারো স্বপ্নকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে—একজনও পাস করতে পারেনি, যেন একটা ভাঙা সেতুর উপর দাঁড়িয়ে থাকা আশার টুকরো সবাই মিলে পড়ে গেছে নিচের অন্ধকারে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, চাঁদপুরের এই কলেজগুলোতে বাজছে হতাশার ঢাক, যেখানে শিক্ষার্থীদের চোখে জমে উঠছে অশ্রুর ফোঁটা, আর অভিভাবকদের বুকে ফুটে উঠছে অনুশোচনার কাঁটা। এ যেন একটা হৃদয়বিদারক কাহিনি, যা শিক্ষার মন্দিরকে প্রশ্ন করে জিজ্ঞাসা করছে: কোথায় হারিয়ে গেল জ্ঞানের আলো, কেন এমন অন্ধকারে ডুবে গেল এত স্বপ্ন? কিন্তু এই বিপর্যয়ের মাঝেও জ্বলে উঠছে একটা দৃঢ় প্রত্যয়ের স্ফুলিঙ্গ—পরিবর্তনের আহ্বান, যা এই অন্ধকারকে ছিন্নভিন্ন করে আলোর পথ দেখাবে, যেন প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে ফিরে আসে সাফল্যের মশাল।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বোর্ডের ফলাফলে এই কালো ছবিটা যেন একটা নির্মম আয়নায় ফুটে উঠলো—ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চারটি কলেজ, নবীনগরের জিনোদপুর ইউনিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বিজয়নগরের নিদারাবাদ ইউনিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চাঁনপুর আদর্শ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আর সদরের ষাইটশালা আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজ—এগুলো যেন শূন্যতার প্রতীক হয়ে দাঁড়ালো, যেখানে একটি একটি করে স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। লক্ষ্মীপুরের তিনটি প্রতিষ্ঠান—কামালনগরের তোরাবগঞ্জ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সদরের ক্যামব্রিজ সিটি কলেজ, রামগতির শীবগ্রাম ফজলুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজ—এখানেও একই কাহিনি, যেন একটা অদৃশ্য ঝড় সবকিছু উজাড় করে দিয়েছে। কুমিল্লার লালমাইয়ের সুরুজ মেমোরিয়াল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আর চাঁদপুরের জীবগাঁও জেনারেল হক হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজও এই অন্ধকারের অংশ হয়ে গেল—প্রতিটি নামটা যেন একটা ক্ষতের চিহ্ন, যা শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতাকে তুলে ধরে বেদনায় মোচড় খাচ্ছে। এই নয়টি প্রতিষ্ঠান থেকে অংশ নেওয়া সব পরীক্ষার্থীই অনুত্তীর্ণ, যেন একটা নিষ্ঠুর খেলায় সবাই হেরে গেছে, কিন্তু এর পিছনে লুকিয়ে আছে শিক্ষকের অনুপস্থিতি, একাডেমিক ঘাটতি, আর মানের অভাবের নির্মম সত্য—যা হাজারো পরিবারের আশাকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. শামসুল ইসলামের কণ্ঠে ছিল গভীর উদ্বেগের সুর, যেন একটা পিতার মতো বেদনায় ভেঙে পড়ছেন তাঁর সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য: “শূন্য পাস পাওয়া প্রতিষ্ঠানের বিষয়টি আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মান, শিক্ষক উপস্থিতি ও একাডেমিক কার্যক্রমে ঘাটতি রয়েছে। আগামী শিক্ষা বর্ষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তাঁর চোখে জ্বলছিল দৃঢ়তার আলো, যা এই অন্ধকারকে চ্যালেঞ্জ করে উঠলো। তিনি আরও বললেন, “বোর্ডের লক্ষ্য শুধু ফল প্রকাশ নয়, শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়ন। যেসব প্রতিষ্ঠান ধারাবাহিকভাবে খারাপ করছে, তাদের নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হচ্ছে।” এই কথাগুলো যেন একটা বিজয়ের ঢাকের শব্দ, যা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাগিয়ে তুলবে নতুন করে, শিক্ষকদের হাতে ধরিয়ে দেবে দায়িত্বের মশাল, আর শিক্ষার্থীদের বুকে ফুটিয়ে দেবে আত্মবিশ্বাসের ফুল।

এই শূন্য পাসের বিপর্যয় যেন একটা সতর্কবাণীর মতো, যা কুমিল্লা বোর্ডের মাটিকে নাড়িয়ে দিয়েছে—কিন্তু এর মধ্যে লুকিয়ে আছে একটা উজ্জ্বল সম্ভাবনার রেখা, যা পরিকল্পনা ও ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে রূপ নেবে একটা নতুন অধ্যায়ে। আশা করি, এই অন্ধকার থেকে উঠে আসবে আলোর সূর্যোদয়, যেখানে প্রতিটি কলেজ হয়ে উঠবে সাফল্যের দ্বীপ, আর শিক্ষার্থীদের স্বপ্নগুলো আবার উড়বে আকাশ ছুঁয়ে—কারণ, শিক্ষা ভেঙে পড়ে না, এটা শুধু পুনর্জন্মের অপেক্ষায় থাকে, আর এই বেদনা থেকে জন্ম নেবে একটা শক্তিশালী পরিবর্তনের ঝড়!

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ