logo
ads

লক্ষ্মীপুরে তিন কলেজে শূন্য পাসের উদ্বেগজনক বিপর্যয়

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশকাল: ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩৯ এ.এম
লক্ষ্মীপুরে তিন কলেজে শূন্য পাসের উদ্বেগজনক বিপর্যয়

প্রতিকী ছবি

লক্ষ্মীপুরের শিক্ষা জগতের আকাশে এইচএসসি-২০২৫-এর ফলাফল যেন একটা ঘন কালো মেঘ হয়ে ঘনিয়ে এসেছে, যা ৪৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৯,৭৫৩ জন শিক্ষার্থীর স্বপ্নের পথে ছায়া ফেলে দিয়েছে। মাত্র ৪,৭৭৪ জন (৪৮.৯৫%) পাসের আলোর মুখ দেখলেও, ১৫৭ জন জিপিএ-৫-এর উজ্জ্বলতায় ঝলমল করছে, কিন্তু তিনটি কলেজের ১৮ জন শিক্ষার্থীর জন্য এই ফলাফল হয়ে উঠেছে একটা ভয়াবহ অন্ধকারের ফাঁদ—একজনও পাস করতে পারেনি! সদরের ক্যামব্রিজ সিটি কলেজের ৪ জন, কমলনগরের তোরাবগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৪ জন, আর রামগতির সেবাগ্রাম ফজলুল রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১২ জন—এই সংখ্যাগুলো যেন একটা ঠাণ্ডা ছুরির ফলার মতো হৃদয়ে বিঁধছে, যা শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতাকে উন্মোচন করছে উদ্বেগজনক একটা প্রশ্ন তুলে: কোথায় হারিয়ে গেল এই তরুণদের স্বপ্নের পথ, কেন এমন নির্মম ব্যর্থতার ছায়া তাদের গ্রাস করলো?

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে ক্যামব্রিজ সিটি কলেজের শিক্ষক রানার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা ব্যর্থ হয়—তিনি ফোন রিসিভ করেননি, যেন নিজেকে লুকিয়ে ফেলেছেন প্রতিষ্ঠানের নিস্ক্রিয়তার অন্ধকারে। স্থানীয় একজনের কথায়, এই কলেজটি নিস্ক্রিয় ছিল, আর এবার মাত্র ৪ জন মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিয়ে সবাই অকৃতকার্য হয়েছে—এই সত্য যেন একটা তীব্র উদ্বেগের ঢেউ, যা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভয়ের ছায়া ফেলছে। তোরাবগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক বাহার হোসেনের কথায় উঠে এলো আরও একটা বেদনার সুর: “মানবিক বিভাগে ৪ জন পরীক্ষা দিয়েছে, সবাই অকৃতকার্য। ঠিকমতো পড়াশোনা না করায় তারা কৃতকার্য হতে পারেনি।” এই কথা যেন একটা আয়না, যা শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে যোগাযোগের ঘাটতি আর প্রস্তুতির দুর্বলতাকে তুলে ধরছে, কিন্তু এর পিছনে কি শুধুই শিক্ষার্থীদের দায়? রামগতির সেবাগ্রাম ফজলুল রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১২ জনের সম্পূর্ণ ব্যর্থতা আরও ভয়ংকর—উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. দিদার হোসেন বললেন, “১২ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে, সবাই ফেল করেছেন,” কিন্তু বিস্তারিত না বলে তিনি যেন একটা রহস্যের পর্দা টেনে দিলেন, যা এই বিপর্যয়ের গভীরতাকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলছে।

এই শূন্য পাসের ঘটনা যেন একটা কালো পাথরের মতো, যা লক্ষ্মীপুরের শিক্ষা ব্যবস্থার বুকে চেপে বসেছে—এটি শুধু শিক্ষার্থীদের ব্যর্থতা নয়, এটি প্রতিষ্ঠানের নিস্ক্রিয়তা, শিক্ষকদের অপ্রতুল প্রস্তুতি, আর সিস্টেমের দুর্বলতার একটা ভয়াবহ চিত্র। এই ১৮ জন তরুণের চোখে জমে ওঠা হতাশার অশ্রু যেন আমাদের সবাইকে প্রশ্ন করছে: কীভাবে আমরা এমন একটা পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে গেলাম, যেখানে একটি প্রতিষ্ঠানও তাদের শিক্ষার্থীদের সাফল্যের পথে নিয়ে যেতে পারলো না? এই উদ্বেগের মধ্যে লুকিয়ে আছে একটা জরুরি আহ্বান—শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের, আর শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর। আশা করি, এই অন্ধকার থেকে একটা আলোর রশ্মি উঠে আসবে, যা এই তিন কলেজকে জাগিয়ে তুলবে নতুন উদ্যমে, আর ভবিষ্যতে কোনো তরুণের স্বপ্ন যেন আর এভাবে ছিন্নভিন্ন না হয়—কারণ, শিক্ষা যেন কখনো অন্ধকারের ফাঁদ না হয়ে, স্বপ্নের উজ্জ্বল সিঁড়ি হয়ে ওঠে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ