logo
ads

সুজন দও: জীবনযুদ্ধে অদম্য এক শিক্ষকের আলোর পথ!

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশকাল: ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৩৩ পি.এম
সুজন দও: জীবনযুদ্ধে অদম্য এক শিক্ষকের আলোর পথ!

বর্তমান বাংলা

নরসিংদীর পাঁচদোনার ধুলোমাখা পথে যেন একটা অদম্য পাখির ডানা মেলেছে—সুজন চন্দ্র দও, একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষক, যার জীবনযুদ্ধের গল্প যেন একটা জ্বলন্ত প্রদীপ, যা অন্ধকার ছিন্ন করে আলো ছড়ায়! পলাশ উপজেলার সানেরবাড়ি গ্রাম থেকে প্রতিদিন ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পাঁচদোনা স্যার কৃষ্ণ গোবিন্দ স্কুল অ্যান্ড কলেজে ইংরেজি শিক্ষকতা করেন তিনি, বাঁশের লাঠির সঙ্গে—যা তার চলার পথের নির্ভরযোগ্য সঙ্গী, যেন একটা অটল সাহসের প্রতীক! জন্ম থেকেই ডান পা স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট হওয়া সত্ত্বেও সুজনের হৃদয়ে জ্বলে আত্মবিশ্বাসের আগুন, যা সমাজের অবহেলা, সমালোচনার ঝড়কে উপেক্ষা করে তাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে—কল্পনা করুন, একটা ভাঙা ডানার পাখি যে উড়ে গেছে আকাশের সীমানা ছুঁতে, সেটাই সুজন দওয়ের জীবন!

১৯৭৬ সালে সানেরবাড়ি গ্রামে জন্ম নেওয়া সুজনের শৈশব থেকেই স্বপ্ন ছিল শিক্ষক হওয়ার, যেন একটা বীজ যা পাথরের ফাঁকেও ফুল ফোটায়। ১৯৯১-তে সানেরবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৯৩-তে পলাশ শিল্পাঞ্চল কলেজ থেকে এইচএসসি, এবং ১৯৯৫-তে নরসিংদী সরকারি কলেজ থেকে ইংরেজিতে ৩০০ নম্বর নিয়ে বি.এ. পাস—প্রতিটি পদক্ষেপে তিনি যেন একটা পাহাড় বেয়ে উঠেছেন, হার না মেনে! ১৯৯৫-তে সানেরবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করলেও তার স্বপ্ন ছিল বড় মঞ্চ—২০০০ সালে পাঁচদোনার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন, যেন একটা স্বপ্নের ফুল ফুটে উঠলো তার জীবনের বাগানে। ২০১০-এ ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বি.এড. ডিগ্রি অর্জন করে তিনি নিজেকে আরও শাণিত করেছেন, যেন একটা তলোয়ার যা অজ্ঞানতার অন্ধকার কাটে।

সুজনের জীবনযুদ্ধ শুধু তাঁর নিজের নয়, তার পরিবারেরও গল্প—২০০৩-এ পলাশের রাবান গ্রামের লীনা রানী করের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি, যিনি যেন সুজনের সংগ্রামের পথে এক অটুট ছায়ার মতো পাশে আছেন। তাদের এক মেয়ে ও এক ছেলে, যাদের মানুষ করাই সুজনের একমাত্র স্বপ্ন, যেন একটা গাছ যার শাখায় ফুটে উঠবে ভবিষ্যতের ফল। অভাব থাকলেও তাদের সংসারে শান্তির সুর বাজে, লীনার আঁচল যেন একটা নিরাপদ আশ্রয়, যা সুজনের সংগ্রামকে আরও শক্তিশালী করে। তিনি বলেন, “শিক্ষকতা মহান পেশা, যার মূল্য টাকায় মাপা যায় না। আমি চাই আমার ছাত্রছাত্রীরা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠুক।” এই কথায় মিশে আছে একটা গভীর প্রতিজ্ঞা, যেন একটা প্রদীপ যা ছাত্রদের পথ আলোকিত করে।

সুজন দওয়ের জীবন যেন একটা কাব্য—যেখানে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তার স্বপ্নের পথে বাধা হয়নি, বরং তাকে আরও দৃঢ় করেছে। তাঁর ক্লাসে ছাত্রছাত্রীদের প্রিয় শিক্ষক তিনি, কারণ তাঁর পড়ানো যেন একটা নদীর স্রোত, যা সকলের হৃদয়ে প্রবাহিত হয়। সুজন দও শুধু একজন শিক্ষক নন, তিনি একটা জীবন্ত অনুপ্রেরণা, যিনি প্রমাণ করেছেন—আত্মবিশ্বাস আর অধ্যবসায় থাকলে পঙ্গুত্বও হার মানে জীবনযুদ্ধে! তাঁর গল্প যেন একটা আলোর বাতিঘর, যা নরসিংদীর পথে পথে ছড়িয়ে দিচ্ছে স্বপ্ন দেখার সাহস।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ