নোয়াখালীর সুবর্ণচরে এক অজানা কবরের নীরবতা যেন হঠাৎ ভেঙে পড়েছে—দুই বছর ধরে মাটির নিচে লুকিয়ে থাকা মমতাজ বেগম শিউলির (২৪) মরদেহ আদালতের নির্দেশে পুলিশের হাতে উত্থিত হয়েছে, যেন এক পুরনো মামলার অন্ধকার গহ্বর থেকে আলোর এক তীব্র রশ্মি বেরিয়ে এসেছে। এই মুহূর্ত যেন হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া এক ভয়াবহ স্বপ্নের মতো—নারী নির্যাতনের শিকার এই তরুণীর দেহ উত্থাপনের মাধ্যমে জাগছে ন্যায়ের সেই অদম্য আকাঙ্ক্ষা, যা দুই বছরের যন্ত্রণাকে চিরকালের জন্য উন্মোচিত করে তুলবে।
বুধবার সকালে মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের চর তোরাব আলী গ্রামের অহিদুর রহমান ভুয়া জামে মসজিদের কবরস্থানে পুলিশের ফোরসা কুড়াল যেন মাটির গভীরে লুকানো সত্যকে খুঁজে বের করেছে। চর ক্লার্ক ইউনিয়নের কেরামতপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে মমতাজ, যিনি নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার (নং ১৭৪/২০২৩, চরজব্বর থানা মামলা নং ০২, তারিখ: ০২/০৫/২০২৩) বাদী ছিলেন, তাঁর মরদেহ এখন পুনর্ময়নাতদন্তের পথে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এই উত্থাপন কাজ সম্পন্ন হয়েছে, যেন আদালতের এই পদক্ষেপ এক মাতৃহীন হৃদয়ের কান্নাকে শুনে উঠেছে—মামলার অগ্রগতিতে এটি যেন এক মাইলফলক, যা চলমান তদন্তকে নতুন আলোয় ভরিয়ে তুলবে।
আদালতের নির্দেশে এই কবর খোঁড়ার ঘটনা এলাকায় যেন এক ঝড় তুলে দিয়েছে—স্থানীয়রা ভিড় করে এসেছেন, চোখে অবিশ্বাসের ছায়া, কিন্তু হৃদয়ে প্রশাসনের তৎপরতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা। অনেকের মনে জাগছে সেই আবেগময় প্রশ্ন—কেন এত দেরি? কেন এই নীরবতা? কিন্তু আজকের এই উত্থাপন যেন সেই যন্ত্রণার অবসানের প্রতীক, যা নারী নির্যাতনের শিকারদের জন্য এক আশার আলো জ্বালিয়েছে। এই ঘটনা শুধু একটি মামলার অগ্রগতি নয়, বরং সমাজের হৃদয়ে জাগিয়েছে সেই তীব্র অনুভূতি—যে, সত্যের জন্য লড়াই অব্যাহত থাকবে, এবং প্রত্যেক নীরব কণ্ঠের জন্য ন্যায়ের এই যুদ্ধ চলবে, অবিরাম, অটুট।

