জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে আজ বৃহস্পতিবার সকালে একটি আলোর ঝলক ছড়িয়ে পড়ল। জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য আবু বকর খানের উদ্যোগে “ডিপ্রেশন ও আত্মহত্যা প্রতিরোধ” বিষয়ক সেমিনারে শিক্ষার্থীদের মনের গভীরে জমে থাকা অন্ধকারের বিরুদ্ধে যেন এক সাহসী যুদ্ধ শুরু হল। সকাল ১০:৩০-এ শুরু হওয়া এই আয়োজন ছিল শুধু একটি সেমিনার নয়, একটি আশার আলো, যা তরুণ মনের হতাশার কালো মেঘ ছিন্ন করতে চায়।
অধ্যাপক ড. মোঃ রইছ উদদীনের উদ্বোধনী বক্তব্যে ফুটে উঠল শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি গভীর উদ্বেগ। অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তা মাহমুদা হাবিবা, যিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, আবেগময় কণ্ঠে বলেন, “২০ কোটি মানুষের এ দেশে সাধারণ স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যেখানে কঠিন, সেখানে মনোবিজ্ঞানীর কাছে যাওয়া সহজ নয়। তাই বন্ধুদের সঙ্গে মনের কষ্ট শেয়ার করতে হবে। পাশের মানুষের খোঁজ রাখতে হবে, যেন কেউ আত্মহত্যার মতো ভয়ঙ্কর পথ বেছে না নেয়।” তাঁর কথায় যেন প্রতিধ্বনিত হল সহমর্মিতার শক্তি।
আবু বকর খান, যিনি এই উদ্যোগের পাণ্ডা, বলেন, “জবি ছাত্রদল সবসময় শিক্ষার্থীদের পাশে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর শিক্ষার্থীরা হাজারো সমস্যায় জর্জরিত হয়, কেউ কেউ ডিপ্রেশনের কবলে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এই সেমিনার সেই প্রবণতা রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।” তাঁর কণ্ঠে শোনা গেল শিক্ষার্থীদের প্রতি অকৃত্রিম দায়বদ্ধতা।
ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট মো. বদিরুজ্জামান সুমনের সেশন ছিল জ্ঞানের আলো ছড়ানোর মতো। উপস্থিত ছিলেন মেহেদী হাসান হিমেল, শামসুল আরেফিন, মাহাবুব নাহিদ ও মাহাদী-উল-মোর্শেদের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিরা, যাঁরা এই উদ্যোগকে আরও গভীরতা দিয়েছেন। এক শিক্ষার্থীর কথায় ফুটে উঠল আয়োজনের তাৎপর্য: “পরিবার ছেড়ে এই শহরে আমরা কষ্টে দিন কাটাই। এমন সেমিনার আমাদের ভুল সিদ্ধান্ত থেকে ফিরিয়ে আনে, মনকে শক্তি দেয়।”
এই সেমিনার শুধু একটি আলোচনা নয়, শিক্ষার্থীদের মনে আশার বীজ বপন করেছে। জবি ছাত্রদলের এই পদক্ষেপ যেন একটি প্রতিশ্রুতি—মনের অন্ধকার দূর করে আলোর পথে হাঁটার।

