কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাতটায় যেন একটি সবুজ আলোর নদী বয়ে উঠল—ধানের শীষের পতাকা ঝুলিয়ে বিএনপির সম্প্রীতি সমাবেশে ভিড় জমল হাজারো মানুষের। স্লোগানের গর্জনে কেঁপে উঠল আকাশ: "গণতন্ত্র ফিরিয়ে দাও, মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দাও!" এই সমাবেশ শুধু রাজনীতির মঞ্চ নয়, যেন একটি হৃদয়ের মিলনমেলা—ধর্ম-বর্ণের সীমা ভুলে সকলে এক হয়ে দাঁড়ালেন গণতন্ত্রের স্বপ্ন নিয়ে, যেন ধানের শীষের মতো নম্র কিন্তু অটুট। তরুণ-যুবক থেকে বৃদ্ধ কৃষক, কলেজের ছাত্র থেকে গ্রামের মানুষ—সকলের চোখে জ্বলল আশার দীপ্তি, আর বুকে বাজল ঐক্যের ঢাক।
সভাপতিত্ব করলেন কেদার ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান, যাঁর কণ্ঠে উঠল আন্দোলনের গান: "বিএনপি কখনো ভয় পায়নি, গণমানুষের অধিকার আদায়ে সংগ্রামের নাম বিএনপি। ঐক্যবদ্ধ থাকলে অন্যায়ের দেয়াল ভেঙে পড়বে।" প্রধান অতিথি ছিলেন ২৫ কুড়িগ্রাম-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী, বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্ট ও তরুণ ড্যাব নেতা ডা. ইউনুছ আলী—যাঁর উপস্থিতি যেন হৃদয়ের চিকিৎসকের মতো, যা রাজনীতির ক্ষত সারায়। তিনি বললেন, "বাংলাদেশ অতিসম্প্রতি এমন সময় পার করছে যখন গণতন্ত্র বইয়ের পাতায় বন্দি, ভোটাধিকার আর মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কুক্ষিগত। আজকের সমাবেশ মানুষকে এক করার, ধর্ম-বর্ণ ভুলে ধানের শীষের নিচে দাঁড়ানোর। এটি কোনো দলের প্রতীক নয়, মানুষের অধিকারের প্রতীক। নাগেশ্বরী-ভূরুঙ্গামারী থেকে সারাদেশে অধিকার ফিরিয়ে আনব।" তাঁর কথায় মনে হয় যেন একটি নদীর স্রোত, যা বিভেদের পাথর ভেঙে একতার সমুদ্রে মিলিয়ে যায়।
প্রধান বক্তা নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও ভিতরবন্দ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শফিউল আলম শফি তাঁর উষ্ণ কণ্ঠে বললেন, "আমাদের রাজনীতি মানুষ ভালোবাসার, প্রতিশোধের নয়। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে আমাদের সম্পদ, শক্তি। এই সমাবেশ সেই মানবিকতার প্রতিফলন।" বিশেষ অতিথিদের মধ্যে ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সহিদুল ইসলাম সরকার, মো. মোজাম্মেল হক দুদু, মো. নাজির হোসেন, মো. ইব্রাহিম আলী, মো. জাহাঙ্গীর বাদশা টুটুল, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি প্রভাষক ফরহাদ হোসেন—সকলে মিলে মাঠকে ভরিয়ে তুললেন আশাবাদের আলোয়। যুবদল নেতা প্রভাষক মোহাম্মদ আলী বললেন, "এখানে শুধু রাজনীতি নয়, মানবিক বার্তা—ধর্ম-বর্ণ ভুলে নাগরিক হিসেবে অধিকার চাই। এটি সেই চেতনার প্রতিধ্বনি।"
সমাবেশ শেষে দেশ-জাতির কল্যাণে দোয়া হলো, আর বক্তারা আহ্বান জানালেন: "ধানের শীষের পতাকা তলে আসুন, ধর্ম-বর্ণ ভুলে এক হয়ে যাই, মানুষ ও দেশের অধিকারের জন্য লড়ি।" এই ডাক যেন একটি বীজ, যা নাগেশ্বরীর মাটিতে পড়ে ফুটবে গণতন্ত্রের ফসলে—ঐক্যের শক্তিতে অন্যায়ের দেয়াল ভেঙে পড়বে, আর বাংলাদেশ হাসবে সম্প্রীতির আলোয়।

