গাজীপুরের শিমুলতলীতে অনুমতিবিহীন বাণিজ্য ও কুটির শিল্প মেলার নামে লটারির কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী শুক্রবার বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে। ঢাকা-শিমুলতলী সড়কের বাংলাদেশ মেশিন টুলস কারখানার সামনে জুমার নামাজের পর এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
বক্তারা অভিযোগ করেন, র্যাফেল ড্রয়ের নামে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা লটারি বিক্রি করা হচ্ছে, যা নিম্ন আয়ের মানুষদের অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এতে দিনমজুর, রিকশাচালকসহ সাধারণ মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। এছাড়া, উচ্চ শব্দে মাইক ব্যবহার, যানজট সৃষ্টি এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্নসহ নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএমটিএফ লিমিটেড আর্মি ফার্মার জন্য নির্ধারিত স্থানে জেলা প্রশাসন ও মহানগর পুলিশের অনুমতি ছাড়া ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলার আয়োজন করা হয়। মেলার আয়োজনকারী বেনারশী ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের স্বত্বাধিকারী বাদল মিয়া।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মেলার মূল উদ্দেশ্য লটারি বাণিজ্য ও হাউজি খেলা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রদর্শন নয়। প্রতিদিন গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় দুই শতাধিক টিকিট বিক্রয়কর্মী অটোরিকশা, সিএনজি ও ট্রাক নিয়ে লটারির টিকিট বিক্রি করছেন। প্রতিদিন ৪০-৪৫ হাজার টিকিট বিক্রি হচ্ছে, যার মূল্য প্রায় ৮-৯ লাখ টাকা। পুরস্কারের আশায় টিকিট কিনে সাধারণ মানুষ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বিক্ষোভে জামিয়া ইসলামিয়া গাজীপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি হাবিবুর রহমান মিয়াজীর সভাপতিত্বে বিভিন্ন ইমাম, ছাত্রনেতা ও সমাজসেবকরা বক্তব্য রাখেন।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, মেলার জন্য কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি, বরং বন্ধের জন্য মহানগর পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছে। গাজীপুর সদর থানার ওসি জানিয়েছেন, আয়োজকরা অনুমতির দাবি করলেও, আমাদের কাছে কোনো আবেদন জমা পড়েনি।
এলাকাবাসী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, মেলার নামে জুয়া ও লটারি অবিলম্বে বন্ধ না হলে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান বলেন, “মেলার অনুমতির জন্য আমাদের কাছে কেউ আবেদন করেননি। তাই আমরা কোনো অনুমতি দেইনি।”

