যশোর মেডিকেল কলেজের (যমেক) কলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহমুদুল হাসান পান্নু যশোরে চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। পাইলস, এনাল ফিশার, ফিস্টুলা, মলদ্বার ক্যান্সার ও ল্যাপারোস্কপিক সার্জারির বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি রোগীর জীবন রক্ষায় অসাধারণ অবদান রেখেছেন।
ডা. পান্নু ল্যাপারোস্কপিক পদ্ধতিতে মলাশয়ের ক্যান্সার ও গর্ভে সন্তান রেখে অ্যাপেনডিক্স অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন করে যশোরে এই ধরনের অস্ত্রোপচারের প্রথম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার এই সাফল্য শুধু চিকিৎসা ক্ষেত্রে নয়, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও প্রশংসনীয়।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয় পাইলস ক্লিনিক, যেখানে প্রতি মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন ডা. পান্নু। পাইলস, কোলন ক্যান্সার, রেক্টাল ক্যান্সার, ফিসটুলা, আইবিএস, ক্রনস ডিজিসসহ মলদ্বারের আধুনিক চিকিৎসা এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে ওষুধের মাধ্যমে সম্ভব।
২০২৪ সালের ২১ মার্চ ডা. পান্নু সেলিম মোল্লা নামে এক রোগীর মলাশয়ের ক্যান্সারের ল্যাপারোস্কপিক অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন করেন। বেসরকারিভাবে এ ধরনের অস্ত্রোপচার পাঁচ লক্ষাধিক টাকারও বেশি খরচ হতো। সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে এই অস্ত্রোপচার হওয়ায় রোগী এবং তার পরিবার অতুলনীয় খুশি প্রকাশ করেন।
এরপর, ২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল ডা. পান্নু গর্ভে সন্তান রেখে অ্যাপেনডিক্স ফেটে যাওয়া রোগী আফরোজা খাতুনের সফল ল্যাপারোস্কপিক অস্ত্রোপচার করেন। এ ধরণের অস্ত্রোপচার যশোরে প্রথমবারের মতো সম্পন্ন হয়েছে। রোগীর স্বামী হুসাইন আহমেদ জানিয়েছেন, ডা. পান্নুর মানবিকতার কারণে স্ত্রী ও সন্তানের সুস্থ জীবন ফিরে এসেছে।
ডা. পান্নু বলেন, “রোগীর সুস্থতা আমার জন্য সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। মলাশয়ের ক্যান্সার ও গর্ভে সন্তান রেখে অ্যাপেনডিক্সের সফল অস্ত্রোপচার আমার চিকিৎসাজীবনের একটি গর্বের মুহূর্ত। ভবিষ্যতেও আমি চিকিৎসাসেবায় আরও নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই।”
ডা. মাহমুদুল হাসান পান্নুর এই চিকিৎসা সাফল্য শুধু যশোরে নয়, খুলনা ও রবিশাল বিভাগের মানুষের জন্যও নতুন আশা জাগিয়েছে। তার এই মানবিক ও পেশাদারিত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত চিকিৎসা ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণার প্রতীক হিসেবে স্বীকৃত।

