রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় আর্থিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা রোজফিনমনিটরিং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি কোম্পানি মেটাকে (ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মূল প্রতিষ্ঠান) "সন্ত্রাসী ও চরমপন্থী সংগঠন" তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। এর ফলে মেটার প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপন কেনা বা আর্থিক লেনদেনে জড়িত হলে রাশিয়ান নাগরিক ও সংস্থাগুলোকে চরমপন্থার পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের ঝুঁকিতে পড়তে হবে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকেই মস্কো মেটার বিরুদ্ধে "রুশোফোবিয়া" প্রচার ও চরমপন্থা উসকে দেওয়ার অভিযোগ তোলে। ২০২৫ সালের মার্চ মাসে রাশিয়ান আদালতের রায়ে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামকে চরমপন্থী কার্যকলাপের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। যদিও সাধারণ ব্যবহারকারীদের অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরাসরি কোনো শাস্তির বিধান নেই, তবে সাম্প্রতিক ঘোষণার পর ঝুঁকি যে বেড়েছে, তা মানবাধিকার আইনজীবীরা সতর্ক করেছেন।
বিশিষ্ট মানবাধিকার আইনজীবী পাভেল চিকভ জানিয়েছেন, প্রসিকিউটররা ইতোমধ্যেই ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে নোটিশ পাঠানো শুরু করেছেন। তিনি আরও বলেন, নতুন তালিকাভুক্তি ব্যবহারকারীদের জন্য পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন না করলেও এটি একটি স্পষ্ট বার্তা—মেটার লোগো প্রদর্শন করা বা প্ল্যাটফর্মগুলোর নাম উল্লেখ করাও এখন আইনি জটিলতা তৈরি করতে পারে।
তবে এই নিষেধাজ্ঞা জনপ্রিয় মেসেঞ্জার অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এর আগে মেটা ঘোষণা করেছিল যে তারা ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালীন রাশিয়ান সেনাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার আহ্বান জানানো বার্তা প্ল্যাটফর্মে অনুমোদন করবে, যদিও বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্যের অনুমতি দেওয়া হবে না।
রাশিয়ান সিনেটর আন্দ্রেই ক্লিশাস অবশ্য দাবি করেছেন, মেটার পণ্য ব্যবহারকারীরা আইন লঙ্ঘন করছেন না এবং আদালতের রায় কার্যকর হওয়ার পর থেকে নতুন কোনো আইনি পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবুও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘোষণা মূলত ব্যবহারকারীদের আতঙ্কিত রাখার কৌশল এবং ভবিষ্যতে আরও কঠোর পদক্ষেপের পথ তৈরি করছে।

