কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ শফি উল্যাহ বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ বিজ্ঞানীদের তালিকায় স্থান অর্জন করে বাংলাদেশের জন্য ইতিহাস রচনা করেছেন। এই মর্যাদাপূর্ণ তালিকায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে তিনি জ্বলজ্বল করছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও একাডেমিক উৎকর্ষের উজ্জ্বল প্রতিফলন।
গত শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫) যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এলসেভিয়ারের সহযোগিতায় টপ সায়েন্টিস্ট নেট প্রকাশিত তালিকায় মোহাম্মদ শফি উল্যাহর নাম ৫১১৭২তম স্থানে উঠে এসেছে। সাইটেশন সংখ্যা, এইচ-ইনডেক্স এবং কো-অথরশিপ-অ্যাডজাস্টেড এইচ-ইনডেক্সের মতো কঠোর মানদণ্ডের ভিত্তিতে প্রস্তুত এই তালিকা বিশ্বব্যাপী গবেষকদের অবদানের স্বীকৃতি বহন করে। গুগল স্কলারের তথ্য অনুযায়ী, তাঁর গবেষণার সাইটেশন সংখ্যা ১,১০৪, যা তাঁর অসাধারণ গবেষণার গভীরতা ও প্রভাবের সাক্ষ্য বহন করে।
গাণিতিক পদার্থবিদ্যা, সলিটন তত্ত্ব এবং ডিফারেনশিয়াল সমীকরণের বিশ্লেষণাত্মক ও সাংখ্যিক পদ্ধতিতে বিশেষজ্ঞ এই গবেষক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দু’বার ‘বেস্ট রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি দুটি স্কোপাস-ইনডেক্সড জার্নালের একাডেমিক এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, যা তাঁর বিশ্বব্যাপী গবেষণার মানকে আরও উঁচুতে নিয়ে গেছে।
এই অর্জনে উচ্ছ্বসিত মোহাম্মদ শফি উল্যাহ বলেন, “বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ বিজ্ঞানীদের তালিকায় প্রথমবারের মতো স্থান পাওয়া আমার জন্য অপরিসীম সম্মানের। এটি কেবল আমার ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের গবেষণা জগতের জন্য গৌরবের মুহূর্ত। আমি সবসময় চেষ্টা করেছি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্ব দরবারে মর্যাদার শিখরে পৌঁছে দিতে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমার বিশ্বাস, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে গবেষণা ও শিক্ষায় আরও বড় সাফল্য অর্জন করবে এবং আমাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বমঞ্চে আরও উজ্জ্বল করে তুলবে।”
গণিত বিভাগের প্রধান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম এই অর্জনকে বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, “শফি উল্যাহর এই সাফল্য আমাদের সবার গর্ব। তাঁর এই অবদান গণিত বিভাগ ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেবে। আমরা আশা করি, তিনি এই ধারা অব্যাহত রাখবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর গবেষণায় সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে।”
মোহাম্মদ শফি উল্যাহর এই অসাধারণ সাফল্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য এক অনুপ্রেরণার উৎস। তাঁর এই কৃতিত্ব বাংলাদেশের গবেষণা জগতকে বিশ্বের দরবারে আরও সম্মানের সঙ্গে তুলে ধরবে বলে আশা করা যায়।

