বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অধীনে চট্টগ্রামের প্রায় সব রেলকলোনিতে মাদকসেবীদের আসা-যাওয়া প্রতিনিয়ত চলছে। এসব কলোনি এখন মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। কিছু জায়গায় মিনি পতিতালয় গড়ে উঠেছে। রেল কর্মকর্তারা যেন দেখেও না দেখার ভান করছেন। কিছু কর্মকর্তার কাছে মাসোহারা আসায় অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে।
তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে, নগরীর টাইগার পাস, আমবাগান, পাহাড়তলী, আগ্রাবাদ, ডেবার পাড় এবং চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের পার্শ্ববর্তী এলাকার রেলকলোনিগুলোতে রেলকর্মীদের বসবাসের কথা। কিন্তু কর্মচারীরা বরাদ্দ বাসায় থাকেন না। বাইরের লোকজনকে ভাড়াটিয়া হিসেবে ভাড়া দিয়ে দেন। ফলে এসব কলোনি অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে মাদককারবারি ও সেবনকারীরা নির্বিঘ্নে ব্যবসা চালাচ্ছে। মাঝে মাঝে মিনি পতিতালয় গড়ে উঠেছে। চোর-চিনতাইকারী ও অন্যান্য অপরাধীরা নিরাপদে বাস করে।
রেলওয়ের এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “কলোনিতে থাকার পরিবেশ নেই। মাদকব্যবসায়ীদের উৎপাতে সন্তানদের লেখাপড়া ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত। তাই নামে বরাদ্দ বাসা ভাড়া দিয়ে অন্যত্র থাকি।”
রেল পূর্বাঞ্চলের কর্মকর্তারা বলছেন, নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার অভাবে কলোনিগুলো অপরাধের আড্ডা হয়ে উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসনকে চিঠি দিলেও প্রতিকার পাওয়া যায় না। থানাগুলোর সঙ্গে মাদককারবারীদের আঁতাত রয়েছে। মাসিক হারে টাকা দিয়ে অপরাধীরা সুযোগ পায়। কিছু রেলকর্মকর্তাও জড়িত থাকায় ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। ফলে আইনশৃঙ্খলা অবনতি ঘটছে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আগামীতে অপরাধ নির্মূলে ব্যবস্থা নেবে বলে জানান। পূর্বাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার মোঃ সবুক্তগীন বলেন, “আগামী বরাদ্দগুলোতে বসবাস নিশ্চিত করা হবে। এতে অপরাধ কমবে। অপরাধীদের সঙ্গে যোগাযোগকারী কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হবে।”
স্থানীয় সূত্র জানায়, এসব কলোনিতে মাদকের প্রবাহ বাড়ার ফলে যুবসমাজের অনেকে আসক্তিতে জড়িয়ে পড়ছে। রেলকর্তৃপক্ষের দীর্ঘদিনের অবহেলায় এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে কঠোর নজরদারি ও যৌথ অভিযানের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করেছেন।

