প্রতি বছর আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয় মীরাবাই জয়ন্তী বা মীরা মহোৎসব, যা ১৬শ শতাব্দীর হিন্দু সাধক, কবি এবং ভক্ত মীরাবাইকে স্মরণে উৎসর্গিত। মীরাবাই ভগবান কৃষ্ণের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন এবং তার সাহসী ভক্তি, অদম্য বিশ্বাস ও কালজয়ী কবিতার জন্য সুপরিচিত।
মীরাবাই জয়ন্তী উদযাপনের মাধ্যমে কেবল জন্মদিন উদযাপন নয়, বরং তাঁর আধ্যাত্মিক যাত্রা, ভক্তি ও সাহিত্যকর্মকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এই বছর (২০২৫) উৎসবটি মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর পালিত হচ্ছে।
মীরাবাই ছিলেন রাজা রতন সিংহ ও রাণী বীর কাওয়ারের কন্যা, জন্মস্থান মেদওয়া রাজকুল, জোধপুর, রাজস্থান। মাতার মৃত্যুর পর দাদা–দাদীর লালন-পালনেই বড় হন। ছোটবেলা থেকেই নতুন জ্ঞান আহরণে আগ্রহী মীরাবাইকে ধর্ম, রাজনীতি, সঙ্গীত, চিত্রকলা সহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
ড্রিক পঞ্চাং অনুযায়ী, ২০২৫ সালে মীরাবাই জয়ন্তী উদযাপিত হচ্ছে তাঁর প্রায় ৫২৭তম জন্মবার্ষিকী হিসেবে।
উদযাপন ও ভক্তি
মীরাবাই জয়ন্তী প্রধানত রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ এবং গুজরাটে ব্যাপকভাবে উদযাপিত হয়।
রাজস্থান: চিত্তোরগড়ে তিনদিনব্যাপী মীরা মহোৎসব আয়োজন করা হয়। উৎসবের অংশ হিসেবে ভক্তি গীতি, নৃত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। শহরের দুর্গের মধ্যে একটি মীরাবাই মন্দিরে ভক্তরা সমবেত হয়ে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। চিত্তোরগড় ছাড়ার পর মীরাবাই বৃন্দাবনে অবস্থান করেছিলেন।
উত্তরপ্রদেশ: বৃন্দাবনের মীরাবাই মন্দিরে ভক্তরা এই বিশেষ দিনে সমবেত হয়ে তাঁর স্মরণে প্রার্থনা ও ভক্তি প্রদর্শন করেন।
গুজরাট: মীরাবাই তাঁর শেষ জীবনযাপন করেছিলেন। কিংবদন্তি অনুসারে, তিনি দ্বারকাধীশ মন্দিরের কৃষ্ণ প্রতিমার সঙ্গে মিলিত হয়েছিলেন। আজও এই মন্দিরে ভক্তরা তাঁর আশীর্বাদ প্রার্থনা করতে ভিড় করেন।
মীরাবাই জয়ন্তী কেবল একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং ভক্তির সম্মিলন, যা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে চলেছে।

