কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার সবুজবাগ এলাকা থেকে অপহৃত ১০ বছর বয়সী তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মীমকে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) গৃহশিক্ষক মোহাম্মদ মুজিব (৩৫) কৌশলে নিয়ে যান, যেন এক নির্দোষ শিশুর হাসি চুরি হয়ে গেল অন্ধকারের গভীরে। পরিবারের অগোচরে অপহরণের পর মুজিব ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন, মেয়ের বাবার হৃদয় যেন ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল এই ভয়াবহ চিৎকারে। চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ স্কুলের এই ছোট্ট ফুলটি, যার চোখে ছিল স্বপ্নের অপার আলো, একদিনের মধ্যেই হারিয়ে গেল, পরিবারের কান্না যেন সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো উথলে উঠল।
বুধবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তথ্যপ্রযুক্তির সূক্ষ্ম সহায়তা ও গোপন সংবাদের আলোয় চকরিয়া থানার পুলিশ উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালায়, যেন আলোর এক তরবারি অন্ধকারকে ছিন্নভিন্ন করে দিল। এপিবিএন সদস্যদের সহযোগিতায় মুজিবের রোহিঙ্গা স্ত্রীর ঘর থেকে মীমকে উদ্ধার করা হয়, তার ক্ষুদ্র হাত যেন আবার মায়ের কোলে ফিরে এলো, পরিবারের চোখে ঝরে পড়ল সেই মিশ্র অশ্রু—আনন্দের এবং যন্ত্রণার। চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ারের কণ্ঠে ফুটে উঠল বিজয়ের সুর, “অভিযোগ পেয়ে তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেছি। মামলা দায়ের হয়েছে, অপহরণকারী পালিয়েছে কিন্তু তাকে ধরতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”
মীমের বাবার কথায় মিশে আছে অসহায়তার সেই তীব্র আবেগ: “সবুজবাগের বাসায় মুজিব আমার মেয়েকে পড়াতো, মঙ্গলবার বিকেলে কৌশলে নিয়ে যায়। পরদিন সকালে ফোন করে ১০ লাখ টাকা চায়। থানায় জানিয়ে বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠাই, সেই সূত্র ধরে উখিয়ায় অভিযান চালিয়ে মেয়েকে ফিরিয়ে আনে—যেন আমার হৃদয়ের অর্ধেক ফিরে এলো, কিন্তু ভয়ের ছায়া এখনও অটুট।” এই ঘটনা যেন শুধু একটি পরিবারের নয়, সমগ্র সমাজের এক জাগরণের ডাক—শিশু নিরাপত্তার এই ফাঁক যেন দ্রুত পূরণ হোক, অপহরণের এই অন্ধকার চক্র ভেঙে পড়ুক, এবং কোনো মা আর এমন কান্নার মুখ না দেখে। মীমের উদ্ধার যেন এক আশার আলোর রশ্মি, যা চকরিয়ার মানুষের হৃদয়ে জাগিয়েছে পুলিশের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা, এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সেই অটুট প্রতিজ্ঞা, যেন কোনো শিশুর হাসি আর অন্ধকারে হারায় না, গর্বিত এবং অমর।

