দেশের শহরগুলোতে ডেঙ্গুর বিস্তার ক্রমেই বাড়ছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যে বরাদ্দ এবং অর্থ ব্যয় করছে, তবুও কার্যকর নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পর্যাপ্ত অর্থ খরচ করলেও সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বাধা দিচ্ছে।
পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। চলতি বছরের ৫ অক্টোবর পর্যন্ত অন্তত নয়জন মারা গেছেন, এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন কমপক্ষে ১,০৪২ জন। মোট ২১৫ জনের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আক্রান্ত সংখ্যা ৫৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং মৃত্যুর হার দাঁড়িয়েছে ১৬.৯৫ শতাংশে। তবে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, প্রকৃত হার আরও বেশি হতে পারে, কারণ অনেক রোগীর হাসপাতাল চিকিৎসা হয়নি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি জনগণের সচেতনতা অপরিহার্য। কিন্তু সিটি করপোরেশনগুলোতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রমে ঘাটতি রয়েছে। কীটতত্ত্ববিদরা ‘সমন্বিত মশক ব্যবস্থাপনা’ কার্যক্রম গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে চারটি মূল দিক রয়েছে—পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা, জৈবিক পদ্ধতিতে মশা নিয়ন্ত্রণ, রাসায়নিক ওষুধ প্রয়োগ, এবং জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস এবং প্রাপ্তবয়স্ক মশা নিয়ন্ত্রণ করলেই ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তারা সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সাধারণ জনগণকে দোষারোপ না করে সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দিচ্ছেন।
চলতি পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে জনগণের শারীরিক ভোগান্তি, মৃত্যুর হার এবং স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়ে যাবে এবং সেবা প্রদানে অসুবিধা দেখা দেবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত পদ্ধতি অব্যাহত না রাখলে সমস্যা বাড়বে এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।

