logo
ads

প্রফেসর নাছিমউদ্দিন মালিথা: স্মৃতির আলোয় এক মহান জীবন

শাহজাদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশকাল: ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৫৫ পি.এম
প্রফেসর নাছিমউদ্দিন মালিথা: স্মৃতির আলোয় এক মহান জীবন

বর্তমান বাংলা

শাহজাদপুরের রবীন্দ্রভূমিতে যেন এক অমর আলোর স্মৃতি জাগ্রত হয়েছে—শিক্ষাবিদ, কবি, রবীন্দ্র গবেষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রফেসর নাছিমউদ্দিন মালিথার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে (১০ অক্টোবর, শুক্রবার) শাহজাদপুর সচেতন নাগরিক ফোরামের উদ্যোগে শহীদ স্মৃতি সম্মেলন কক্ষে স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে মিশে গেছে তাঁর জীবন ও কর্মের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা। ২০২০ সালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন, কিন্তু তাঁর সৃষ্টি ও অবদান যেন আজও বাংলার হৃদয়ে জ্বলজ্বল করে।

শিক্ষা, সাহিত্য ও রবীন্দ্র গবেষণার পথিক
বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবে দেশের স্বনামধন্য কলেজগুলোতে শিক্ষকতা করেছেন নাছিমউদ্দিন মালিথা, কিন্তু তাঁর হৃদয় ছিল রবীন্দ্রনাথের চিন্তা ও দর্শনের প্রতি নিবেদিত। রবীন্দ্র গবেষক হিসেবে তাঁর কাজ, কবিতা, ও গবেষণামূলক প্রবন্ধ-গ্রন্থ যেন বাংলা সাহিত্যের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্নদ্রষ্টা ও উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি এই অঞ্চলের শিক্ষা ও সংস্কৃতির জন্য এক অমর আলো রেখে গেছেন। আমৃত্যু তিনি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলেন, যেন তাঁর জীবন ছিল মানবতা ও জ্ঞানের এক অটুট সেতু।

স্মরণসভায় শ্রদ্ধার সুর
সকাল ১০টায় শাহজাদপুরের শহীদ স্মৃতি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় তাঁর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন প্রখ্যাত সাংবাদিক চকোর মালিথা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান, শাহজাদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুর রাজ্জাক, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) মো. নজরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ও নাছিমউদ্দিনের দৌহিত্র সাদিত বিহঙ্গ মালিথা, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান মইনুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক জাবেদ ইকবাল, জামিড়তা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হায়দার আলী, শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক শিবলী মাহবুব, শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, নাছিমউদ্দিন মালিথা স্মৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া ইসলাম, মশিপুর সরিষাকৈল ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষক আশরাফুল ইসলাম, ও শিক্ষার্থী আদিব শাফায়েত আব্দুল্লাহ। তাদের কথায় মিশে গেছে নাছিমউদ্দিনের জীবনের সেই অমর অবদান, যা শিক্ষা ও সংস্কৃতির পথে এক উজ্জ্বল দিশারি। সমাপনী বক্তব্য ও দোয়া পরিচালনা করেন সচেতন নাগরিক ফোরামের উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মো. আবু জাফর।

দোয়ার আহ্বান
বাদ আসর ওয়ারেসিয়া কবরস্থান ঈদগাহ মাঠে ও রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামে মালিথা বাড়ি জামে মসজিদে তাঁর আত্মার শান্তি কামনায় দোয়ার আয়োজন যেন শাহজাদপুর ও রাজশাহীর মাটিতে ছড়িয়ে দিয়েছে তাঁর স্মৃতির সেই মধুর স্পর্শ। এই দোয়ায় যেন মিশে গেছে তাঁর জীবনের সেই অটুট প্রতিজ্ঞা, যা রবীন্দ্রনাথের চিন্তাধারাকে জনগণের হৃদয়ে পৌঁছে দিয়েছে।

অমর স্মৃতি
নাছিমউদ্দিন মালিথার জীবন যেন এক মশাল—শিক্ষা, কবিতা, রবীন্দ্র গবেষণা, ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি শাহজাদপুরের মাটিকে ধন্য করেছেন। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে তাঁর অবদান যেন চিরকাল জ্বলবে বাংলার হৃদয়ে। এই স্মরণসভা ও দোয়া যেন শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং তাঁর আদর্শের প্রতি এক অটুট শ্রদ্ধার প্রতীক, যা আমাদের হৃদয়ে জাগিয়ে তুলছে সেই গভীর অনুভূতি যেন তাঁর সৃষ্টি ও স্বপ্ন চিরকাল আলোকিত করে রাখবে বাংলার শিক্ষা ও সংস্কৃতির পথ, গর্বিত এবং অমর।

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ