logo
ads

সুন্দরবনে মালা ফাঁদ উদ্ধার: বন্যপ্রাণী রক্ষায় বনবিভাগের সফল অভিযান

শরণখোলা প্রতিনিধি

প্রকাশকাল: ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:১৩ পি.এম
সুন্দরবনে মালা ফাঁদ উদ্ধার: বন্যপ্রাণী রক্ষায় বনবিভাগের সফল অভিযান

বর্তমান বাংলা

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের গভীর বনাঞ্চলে অভিযান চালিয়ে বনবিভাগের স্মার্ট টিম বনের বালির নিচে লুকানো একটি ১০৫ ফুট লম্বা মালা ফাঁদসহ বিপুল সংখ্যক ফাঁদ জব্দ করেছে। এই অভিযান বন্যপ্রাণীদের অবৈধ শিকার রোধে বনবিভাগের অক্লান্ত প্রচেষ্টার আরেক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যা শিকারিদের ফাঁদের নেটওয়ার্ককে ব্যাহত করছে।

গতকাল (১৩ অক্টোবর) সকাল ৬টার দিকে শরণখোলা রেঞ্জের অধীনে মেহেরআলী থেকে খাজুরতলা পর্যন্ত পায়ে হেঁটে টহল চালানোর সময় বনের বালির নিচে লুকানো ১০৫ ফুট লম্বা মালা ফাঁদটি উদ্ধার করা হয়। চিহ্ন হিসেবে ফাঁদ স্থাপনকারীরা সংলগ্ন গাছে জুতা ঝুলিয়ে রেখেছিল, যা টহলদলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এই ফাঁদগুলো প্রধানত হরিণসহ বন্যপ্রাণী শিকারের জন্য ব্যবহৃত হয়, যা বন্যজীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি।

একই এলাকা থেকে আরও ২০টি হাঁটা ফাঁদ জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে বেলা ২টার দিকে রূপারগাং থেকে ডিমেরচর পর্যন্ত পায়ে টহলকালে অতিরিক্ত ১৫টি হাঁটা ফাঁদ উদ্ধার হয়। এছাড়া, কুতুবের খালের পাশবর্তী বনাঞ্চল থেকে আরও ৩টি ফাঁদ সংগ্রহ করা হয়। মোটামুটি ৩৮টিরও বেশি ফাঁদ জব্দের পর সেগুলোকে আগুন দিয়ে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে, যাতে কোনো পুনরায় ব্যবহার না হয়।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, "বন্যপ্রাণী রক্ষায় বনবিভাগের টহল কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। যারা বনে ফাঁদ পেতে বন্যপ্রাণী শিকার করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" এই অভিযানগুলো 'প্যারালাল লাইন সার্চিং' এবং 'ফুট প্যাট্রোল' পদ্ধতির মাধ্যমে পরিচালিত হয়, যা দুর্গম বনাঞ্চলে শিকারিদের গোপন ফাঁদগুলো উন্মোচন করতে সহায়ক।

সুন্দরবনের মতো জগৎ বিখ্যাত জীববৈচিত্র্যের কেন্দ্রে এমন অবৈধ শিকারের ঘটনা আমাদের সকলকে উদ্বিগ্ন করে। হরিণ, চিত্রহরিণসহ বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীরা এই ফাঁদের শিকার হয়ে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছে। বনবিভাগের এই সফলতা প্রশংসনীয় হলেও, স্থানীয় সম্প্রদায়ের সহযোগিতা ছাড়া এই লড়াই পুরোপুরি জয়ী হবে না। আমরা সকলে সচেতন হই—বন্যপ্রাণী শিকারের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকি এবং সন্দেহজনক কার্যকলাপ দেখলে বনবিভাগের হটলাইন (০১৭১৩৪০০১২৩) বা নিকটস্থ থানায় খবর দিই। সুন্দরবনের সংরক্ষণ আমাদের সকলের দায়িত্ব—একসঙ্গে এটিকে রক্ষা করি, যাতে আগামী প্রজন্মও এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ