logo
ads

আলোক ফাঁদে কৃষকদের নতুন আশা: পোকার ছায়া দূরে সরে যাচ্ছে

মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশকাল: ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১০:২২ এ.এম
আলোক ফাঁদে কৃষকদের নতুন আশা: পোকার ছায়া দূরে সরে যাচ্ছে

বর্তমান বাংলা

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার চড়পাড়া ব্লকের ধানক্ষেতে বৃহস্পতিবার রাতের অন্ধকার যেন একটা উজ্জ্বল মশালের আলোয় ভরে উঠলো—কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে স্থাপিত আলোক ফাঁদে আটকে পড়া ক্ষতিকর পোকামাকড়ের ছায়া যেন ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে, আর কৃষকদের চোখে ফুটে উঠছে ফসলের সোনালি স্বপ্নের আলো। এ যেন একটা জাদুর মতো, যেখানে রাসায়নিক বিষের ছায়া না ঘেঁষে আলোর আকর্ষণে শত্রুরা নিজেরাই ফাঁদে পড়ে যায়—পরিবেশের সবুজ পাতা অক্ষত রেখে, মাটির সুবাস অটুট করে। চড়পাড়ার এই কৃষকরা, যাদের হাতে ছিল শুধু খড়ের গন্ধ আর চিন্তার ছায়া, আজ সেই আলোক ফাঁদকে দেখে যেন একটা নতুন জীবনের স্বাদ পাচ্ছেন, যা তাঁদের ফসলকে রক্ষা করবে অন্ধকারের হাত থেকে। এই সাফল্য যেন একটা বিজয়ের ঢাক, যা খাগড়াছড়ির পাহাড়ি মাটি থেকে ছড়িয়ে পড়বে সারা দেশে, কৃষকদের হাতে ধরিয়ে দেবে একটা বিষমুক্ত ফসলের উজ্জ্বল ভবিষ্যত।

রাতের নীরবতায় আলোক ফাঁদের নীলো আলো জ্বলে উঠতেই যেন একটা অদৃশ্য যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল—ক্ষতিকর পোকারা আকৃষ্ট হয়ে এসে আটকে পড়লো ফাঁদের জালে, আর সকালের আলোয় কৃষকরা সেই শিকারগুলো গুনে নিয়ে হাসির হাসি ছড়ালেন মুখে। মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসের প্রতিনিধিদল, যাদের নেতৃত্বে ছিলেন কৃষিবিদ মো. সবুজ আলী, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. সেলিম রানা, সহকারী সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুর রহিম মজুমদার, উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. ইউনুছ নুর এবং উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ চাকমা, তারা মাঠে নেমে এই ফাঁদের কার্যকারিতা পরিদর্শন করলেন স্থানীয় কৃষকবৃন্দের সঙ্গে। বিভিন্ন ধরনের পোকা শনাক্ত হয়েছে, কিন্তু ক্ষতিকরদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম—এই খবর যেন একটা উষ্ণ বাতাস, যা কৃষকদের বুকে আশার স্ফুলিঙ্গ জ্বালিয়ে দিলো। বর্তমানে চড়পাড়ায় দুটি ফাঁদ স্থাপিত হয়েছে, আর বাইল্যাছড়ি ও আজমরাইয়ে আরও দুটি আসছে শীঘ্রই; এ যেন একটা চেইনের মতো, যা পাহাড়ের প্রতিটি ঢালে ছড়িয়ে পড়বে আলোর জাল বুনতে।

কৃষকদের মধ্যে এই উদ্যোগ যেন একটা ঝড় তুলে দিয়েছে—তাঁরা যেন একটা নতুন অস্ত্র পেয়েছেন হাতে, যা বিষাক্ত কীটনাশকের ছায়া থেকে মুক্তি দিচ্ছে তাঁদের ফসলকে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ চাকমার কণ্ঠে ছিল উদ্দীপনার সুর: “আলোক ফাঁদ একটা সহজ, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি—এটি পোকা শনাক্তকরণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে, আর কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।” তাঁর কথায় যেন একটা আলিঙ্গনের উষ্ণতা, যা কৃষকদের মনে জাগিয়ে তুললো আত্মবিশ্বাসের আলো। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. সেলিম রানা যোগ করলেন, “আলোক ফাঁদের মাধ্যমে কৃষকরা সহজেই জানতে পারছেন তাদের জমিতে কোন পোকা আছে, তার পরিমাণ কতটুকু—এতে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হচ্ছে, আর অতিরিক্ত কীটনাশকের প্রয়োজন কমে যাচ্ছে।” এই কথাগুলো যেন একটা মধুর গান, যা কৃষকদের হৃদয়ে বাজছে পরিবেশ রক্ষার সুরে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সবুজ আলীর চোখে ছিল আশার ঝিলিক: “কৃষকদের রাসায়নিক কীটনাশকের পরিবর্তে জৈবিক ও যান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। চড়পাড়ায় আলোক ফাঁদ ব্যবহারের পর ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি কমে এসেছে—যা আশাব্যঞ্জক। আমরা বিশ্বাস করি, এই পদ্ধতি কৃষকদের মধ্যে দ্রুত জনপ্রিয় হবে, ফসলের সুরক্ষা নিশ্�্চিত করবে।” এই উদ্যোগ যেন একটা সবুজ বিপ্লবের বীজ, যা বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত সৌরশক্তি চালিত আলোক ফাঁদের মতো পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির আলোয় জ্বলে উঠছে সারা দেশে—কীটনাশকের বিষাক্ত ছায়া কমিয়ে, ফসলের উৎপাদন বাড়িয়ে, আর কৃষকদের মুখে ফুটিয়ে দিচ্ছে হাসির ফুল। এই সাফল্যের ঢেউ যেন মাটিরাঙ্গার পাহাড়ি ঢাল বেয়ে নেমে আসুক অন্যান্য এলাকায়, যাতে প্রতিটি কৃষকের হাতে থাকে এই আলোর মশাল—কারণ, ফসলের সুরক্ষা শুধু খাদ্য নয়, এটা জীবনের আলো জ্বালানোর অঙ্গীকার!

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ