logo
ads

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এর ৫৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশকাল: ৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৩৮ পি.এম
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এর ৫৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

নিজস্ব

গাজীপুরের ধানক্ষেতের সবুজ কোলে, যেখানে বীজ থেকে ফুটে ওঠে জাতির খাদ্যের সোনালি আশা, সেখানে আজ জ্বলে উঠেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)-এর ৫৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উজ্জ্বল আলো—যেন একটা অমর উৎসবের মতো ছড়িয়ে পড়েছে বিজ্ঞানীদের নিরলস ত্যাগের গান। রবিবার (৫ অক্টোবর ২০২৫) সকালে ব্রির সদর দপ্তর থেকে বের হয়েছে বর্ণাঢ্য র‍্যালি—সড়কগুলো প্রদক্ষীণ করে প্রশাসন ভবনের সামনে এসে শেষ হয়েছে, যাতে বিজ্ঞানী-কর্মকর্তা-শ্রমিকরা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ধ্বনিত করেছে, "ধানের বীজে জাতির ভবিষ্যৎ!" এই র‍্যালি শুধু একটা মিছিল নয়, এ তো ৫৫ বছরের অবিরাম লড়াইয়ের জয়গান—যা ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার পেট ভরানোর স্বপ্নকে করে তুলেছে বাস্তব। পরে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় মিলেছে হৃদয়ের কথা, যা শেষ হয়েছে বিশেষ মোনাজাতে—আর প্রশাসন ভবনের সামনে কেক কেটে মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান যেন বলে দিয়েছেন, "আমাদের যাত্রা এখানে থামবে না।"

ধানভিত্তিক খামার বিন্যাস বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রধান ড. মো. ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে এই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্রির মাননীয় মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান—যাঁর কথায় মিশে আছে কত ত্যাগের স্মৃতি, কত আশার রশ্মি। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. রফিকুল ইসলাম। মহাপরিচালক গভীর কণ্ঠে বললেন, "প্রতিষ্ঠার পর থেকে ব্রি দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে নিরলসভাবে কাজ করছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদা পূরণে নতুন নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে ধানের ফলন আরও বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এজন্য প্রয়োজন উচ্চ ফলনশীল ধান ও আধুনিক উৎপাদন প্রযুক্তির ব্যাপক প্রচলন।" তিনি আরও যোগ করলেন, "জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যে নতুন চ্যালেঞ্জ সামনে আসছে তা মোকাবেলা করে নির্দিষ্ট পরিমাণ জমিতে বেশি ধান উৎপাদন করে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।"

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সকল বিভাগীয় ও শাখা প্রধানসহ ব্রির ক্রিয়াশীল বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ, সর্বস্তরের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকগণ—যাঁদের উপস্থিতি যেন যোগ করেছে এই উৎসবে এক অটুট ঐক্যের শক্তি। ১৯৭০ সালের ১ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত এই ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার পর থেকে আটটি হাইব্রিডসহ ১২১টি উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করে দেশের ধান উৎপাদনকে তুলে ধরেছে—যা বাংলাদেশকে খাদ্যস্বয়ত্বশীল করে তুলেছে। এই ৫৫ বছরের যাত্রা শুধু বিজ্ঞানের নয়, এ তো কৃষকের ঘামে মিশে থাকা জাতির গৌরবের গল্প।

ব্রির এই বার্ষিকী যেন বলে দিচ্ছে, ধানের এই সোনালি দানায় মিশে আছে জাতির ভবিষ্যৎ—আশা করি, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্রির এই নিরলস প্রচেষ্টা আরও জোরদার হবে, এবং বাংলাদেশের প্রত্যেকটা খেতে ফুটবে উচ্চ ফলনশীল জাতের সবুজ। কারণ, ধানের শীষে তো আমাদের খাদ্যের স্বপ্ন—এটা শুকিয়ে গেলে কীভাবে ফুটবে জাতির হাসি?

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ