ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে সূর্যালোকের ঘণ্টা প্রতি বছর কমছে, যা দেশের সৌরশক্তি উৎপাদন ও কৃষি উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। Nature’s Scientific Reports-এ প্রকাশিত এক নতুন গবেষণায় এমনই আশঙ্কাজনক তথ্য উঠে এসেছে। এই গবেষণা পরিচালনা করেছেন বারানসী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (BHU), ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিকাল মেটেরিওলজি (IITM), পুনে এবং ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (IMD)।
গবেষকরা ১৯৮৮ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে দেশের ২০টিরও বেশি স্টেশন থেকে সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, উত্তর ভারতের সমভূমিতে সূর্যালোকের ঘন্টা প্রতি বছর ১৩.১ ঘণ্টা কমছে, পশ্চিম উপকূলে ৮.৬ ঘণ্টা, হিমালয়ের অঞ্চলে ৯.৫ ঘণ্টা, পূর্ব উপকূলে ৪.৯ ঘণ্টা, ডেকান প্ল্যাটোতে ৩.১ ঘণ্টা এবং কেন্দ্রীয় অভ্যন্তরীণ অঞ্চলে ৪.৭ ঘণ্টা হ্রাস পাচ্ছে।
গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, অক্টোবর থেকে মে মাস পর্যন্ত সূর্যালোকের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, কিন্তু জুন-জুলাই মাসে তা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। তবে উত্তর অভ্যন্তরীণ এবং হিমালয় অঞ্চলে এই ধারা কিছুটা ভিন্ন, যেখানে মৌসুমী পার্থক্য কম লক্ষ্য করা গেছে।
হ্রাসের সম্ভাব্য কারণ হিসেবে গবেষকরা শিল্প, যানবাহন ও জীবাশ্ম জ্বালানির দূষণ থেকে সৃষ্ট ক্ষুদ্র কণার বৃদ্ধি, এবং মনসুনে মেঘাচ্ছন্নতার বৃদ্ধি উল্লেখ করেছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সূর্যালোকের এই হ্রাস দেশের সৌর শক্তি উৎপাদনকে প্রভাবিত করতে পারে, যা ভারতের পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি লক্ষ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এছাড়াও ফটোসিন্থেসিসের উপর নির্ভরশীল ফসলের উৎপাদনও কমতে পারে।
গবেষকরা সতর্ক করেছেন যে, "ভারতীয় উপমহাদেশে সূর্যালোকের ঘণ্টার হ্রাস সমস্ত সময়কাল জুড়ে স্থায়ীভাবে চলছে, শুধুমাত্র উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে সামান্য মৌসুমী স্থিতিশীলতা দেখা গেছে।"
সূত্র: Nature’s Scientific Reports, BHU, IITM, IMD, HT/Science News

