logo
ads

সুন্দরবনে নিষিদ্ধ খালে মাছ ধরার সময় ৪ জেলে আটক

শরণখোলা প্রতিনিধি

প্রকাশকাল: ১১ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:১৯ পি.এম
সুন্দরবনে নিষিদ্ধ খালে মাছ ধরার সময় ৪ জেলে আটক

বর্তমান বাংলা

শরণখোলার কচিখালী অভয়ারণ্যের নিষিদ্ধ দুধরাজ খাল যেন একটি নীরব ফাঁদ, যেখানে সকালের কুয়াশায় লুকিয়ে থাকে সুন্দরবনের রহস্যময় সৌন্দর্য—রয়েল বেঙ্গল টাইগারের পায়ের ছাপ, চরমপাখির ডাক, আর ম্যানগ্রোভের সোনালি ঢেউ। কিন্তু শনিবার (১১ অক্টোবর) সকালে সেই খালের জলে নেমে এসেছিল চার জেলে, যাদের জালের ছাঁটে মিশে গেল লক্ষাধিক টাকার গলদা ও সাদা মাছ—একটি অবৈধ স্বপ্নের শিকার। পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের স্মার্ট টিম–১-এর টিম লিডার ফরেস্টার দিলীপ মজুমদারের নেতৃত্বে বনরক্ষীদের অভিযান যেন একটি বিদ্যুৎস্ফুলিঙ্গ—আটক হয়েছে লিটন মাতুব্বর (৪৫), তাইজুল হাওলাদার (১৮), আবু খালেক মৃধা (৫০) ও হামিদ হাওলাদার (৫২), যাদের বাড়ি বকুলতলা ও সোনাতলা গ্রামে। জব্দ হয়েছে দুটি জাল ও দুটি ডিঙ্গি নৌকা—যেন সুন্দরবনের নিরাপত্তার এক জয়যাত্রা, কিন্তু জেলেদের চোখে ফুটে উঠেছে কষ্টের ছায়া, যারা হয়তো পেটের ভাতের খাতিরে এই ঝুঁকি নিয়েছিলেন।

সেই অভয়ারণ্যের খালে, যেখানে জলের স্রোতে মিশে থাকে সুন্দরবনের অমূল্য জীববৈচিত্র্য—হিলসা মাছের ঝাঁক, কাঁকড়ার লুকোচুরি, আর হীরোরো পাখির নাচ—সেখানে অবৈধ মাছ ধরা যেন একটি নীরব বিষাক্ততা, যা ধীরে ধীরে গ্রাস করে নিচ্ছে এই বিশ্ব ঐতিহ্যের টুকরোকে। বনরক্ষীদের অভিযান শুধু আটক নয়, একটি রক্ষাকর্তার প্রতিজ্ঞা—যাতে এই খালের জল আবারও পরিষ্কার হয়ে ওঠে, আর জীবজগতের ভারসাম্য অটুট থাকে। আটক জেলেরা, যাদের মধ্যে একজন মাত্র ১৮ বছরের যুবক, হয়তো ভেবেছিলেন এই ধান্দায় একটি দিনের রুজি—কিন্তু বন আইনের কঠোর হাত তাদের স্বপ্নকে চূর্ণ করে দিয়েছে। বন বিভাগের দায়ের মামলায় তাদের আদালতে হাজির করার প্রক্রিয়া চলছে, যেন ন্যায়ের তুলোয় ওজন হয় তাদের ভুলের।

পূর্ব সুন্দরবন বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর কণ্ঠে জাগে অটল সংকল্প: “অভয়ারণ্যের নিষিদ্ধ খালে অবৈধভাবে মাছ ধরার অভিযোগে চার জেলেকে আটক করে মামলা করা হয়েছে। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।” এই কথায় ফুটে ওঠে সুন্দরবনের এক অদম্য রক্ষকের গল্প—যেখানে বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষা এবং স্থানীয় জেলেদের জীবিকার মধ্যে একটি কঠিন ভারসাম্য রক্ষা করা হচ্ছে। এই অভিযান যেন একটি আলোর সংকেত, যা স্মরণ করিয়ে দেয়: সুন্দরবন শুধু একটি বন নয়, একটি জীবন্ত হৃদয়—যার জন্য আমাদের সকলকে দায়িত্বশীল হতে হবে, যাতে এর খালের জল আবারও গান গায়, আর জীববৈচিত্র্যের রঙ চিরকাল ফুটে থাকে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ