নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার বড়খাপন ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ বিল-হাওড়ের সোনালি জলে সিক্ত মাটিতে, যেখানে বিলে ধান চাষের সবুজ ঢেউয়ের মাঝে কৃষকরা প্রতি মুহূর্তে বজ্রপাতের ভয়ে কাঁপেন, সেখানে শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে নেমে এসেছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান—যেন একটি আশার বার্তা বয়ে নিয়ে। বজ্রনিরোধক শেল্টার নির্মাণ থেকে শুরু করে বিশ্রামাগার, সাবমার্জিবল রাস্তা এবং বিল-হাওড় কেন্দ্রিক পর্যটনের সম্ভাবনা যাচাইয়ের মতো উন্নয়নমুখী পরিকল্পনা নিয়ে তাঁর সরেজমিন পরিদর্শন যেন এই প্রান্তিক এলাকার মানুষের হৃদয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে নতুন আলোর দীপ্তি। ম্যাধা বিল, দুবালা বিল, গোড়াডোবা বিল ও মহিশাসুর হাওড়ের জলে ভাসা নৌকায় চড়ে তিনি ধারণা নিয়েছেন স্থানীয় কৃষক-মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে, যেন প্রতিটি ফসলের স্বাদে মিশে যায় নিরাপত্তার স্বাদ। এই বিল অঞ্চল, যা নেত্রকোণার অর্থনীতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, প্রতি বছর বজ্রপাতে কৃষকদের জীবন কেড়ে নেয়—এবং এই পরিদর্শন যেন সেই অন্ধকারের মুখোমুখি হয়ে দাঁড়ানোর একটি প্রতিজ্ঞা।
সেই বিশাল বিলের তীরে, যেখানে ধানের ক্ষেতে বজ্রের কালো মেঘের ছায়া পড়ে, জেলা প্রশাসকের পদধ্বনি যেন একটি নতুন স্বপ্নের শুরু। বজ্রনিরোধক শেল্টার নির্মাণের পরিকল্পনা কৃষকদের জন্য একটি অমূল্য আশ্রয় হবে—যেন বজ্রের আঘাতে আর কোনো পরিবার শোকের কালো পতাকা উড়াবে না। বিশ্রামাগার এবং সাবমার্জিবল রাস্তার পরিকল্পনা বর্ষাকালে জলমগ্ন হয়ে যাওয়া এই এলাকাকে যুক্ত করবে মূলধারার সাথে, যাতে ফসল বাজারে পৌঁছায় দ্রুত, আর কৃষকের হাসি ফুটে ওঠে। আর বিল-হাওড় কেন্দ্রিক পর্যটনের সম্ভাবনা যাচাই—মহিশাসুর হাওড়ের রহস্যময় জলরাশি, যা প্রকৃতির এক অপরূপ ছবি—যেন এই অঞ্চলকে পরিবর্তন করবে একটি পর্যটন কেন্দ্রে, যেখানে স্থানীয় মানুষের জীবিকা নতুন উচ্চতায় উঠবে। পরিদর্শনের পর বড়খাপন ইউনিয়ন পরিষদে পৌঁছে তিনি প্রাঙ্গণে বেশ কিছু তাল গাছের চারা রোপণ করেছেন—যেন সবুজের এই স্পর্শে ফুটে উঠবে উন্নয়নের সবুজ স্বপ্ন, আর ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্য একটি ছায়াশীতল আশ্রয়।
এই পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. কামরুল হুদা, বড়খাপন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলামসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা—যেন একটি সম্মিলিত শক্তির প্রতীক, যা উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। জেলা প্রশাসকের এই উদ্যোগ যেন নেত্রকোণার প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষের কাছে একটি বার্তা—যে, বিলের জল আর বজ্রের আঘাত আর ভয়ের কারণ হবে না, বরং হয়ে উঠবে সমৃদ্ধির উৎস। এই পরিকল্পনা যেন একটি নতুন অধ্যায়ের শুরু—কৃষকের নিরাপত্তা, পর্যটনের সম্ভাবনা এবং সবুজ উন্নয়নের মাধ্যমে নেত্রকোণাকে গড়ে তুলবে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের। কলমাকান্দার এই বিল অঞ্চল, যা প্রকৃতির দান এবং মানুষের পরিশ্রমের মিলনস্থল, এখন আশা করে একটি নতুন যাত্রা—জেলা প্রশাসকের হাত ধরে।

