জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ভাষণে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনকে আখ্যা দিয়েছেন “বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রতারণা” হিসেবে। তাঁর এই মন্তব্য বিশ্বনেতাদের অবাক ও হতবাক করেছে, কারণ এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত বাস্তবতাকে অস্বীকার করে।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞ ম্যাট ম্যাকডোনাল্ডের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ট্রাম্পের অবস্থান জলবায়ু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে নতুন করে বিতর্ক তৈরি করলেও, বৈশ্বিক পর্যায়ে জলবায়ু উদ্যোগকে থামাতে পারবে না।
ম্যাকডোনাল্ড বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসনের রাজনৈতিক বক্তব্য জলবায়ু অস্বীকারবাদকে উসকে দিতে পারে, তবে এখন পৃথিবীর বহু দেশ ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অবস্থান যাই হোক না কেন, স্থানীয় প্রশাসন, বেসরকারি খাত ও নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণই জলবায়ু কর্মসূচিকে সামনে এগিয়ে নিচ্ছে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, ভারত এবং ল্যাটিন আমেরিকার কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যে নিজেদের কার্বন নিরপেক্ষতার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। পাশাপাশি, জাতিসংঘের COP30 সম্মেলনের আগে বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিনিয়োগ ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে নতুন রেকর্ড ছুঁয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি অঙ্গরাজ্য—যেমন ক্যালিফোর্নিয়া, নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটন—নিজস্ব নীতিমালার মাধ্যমে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে স্বাধীনভাবে কাজ করছে। এছাড়া, অ্যাপল, গুগল, টেসলার মতো করপোরেশনগুলোও শূন্য-কার্বন নীতি গ্রহণ করেছে।
বিশ্লেষণটি শেষ করে ম্যাট ম্যাকডোনাল্ড লিখেছেন, “ট্রাম্প হয়তো জলবায়ু সংকটকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন অস্বীকারের যুগ শেষ হয়ে গেছে। পৃথিবীর মানুষ এখন এর বাস্তব প্রভাব প্রত্যক্ষ করছে, তাই বৈশ্বিক জলবায়ু পদক্ষেপ আর কোনো ব্যক্তির ওপর নির্ভর করছে না।”
সূত্র:দ্য কনভার্সেশন, দ্য ইউনিভার্সিটি অফ কুইন্সল্যান্ড, বিবিসি ক্লাইমেট ডেস্ক, সিএনএন এনভায়রনমেন্ট
(সংকলন ও সম্পাদনা: দৈনিক বর্তমানবাংলা আন্তর্জাতিক ডেস্ক)

